ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জনবল নিয়োগে প্রাণচঞ্চল সৈয়দপুর রেল কারখানা 

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৬ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৩
জনবল নিয়োগে প্রাণচঞ্চল সৈয়দপুর রেল কারখানা 

নীলফামারী: জনবল সংকট কাটিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে রেলে। সেই ধারাবাহিকতায় দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ২৮৯ জন খালাসি যোগদান করেছেন।

এতে কিছুটা হলেও কারখানার প্রতিটি শপে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।  

ফলে জনবলের কিছুটা ঘাটতি পূরণ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে রেলওয়ে কারখানায় নতুন শ্রমিক যোগদানের আগের অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত পাঁচশ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে।
 

রেলওয়ে সূত্র জানায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর রয়েছে ২৯টি উপ-কারখানা (শপ)। একসময় কারখানাটিতে দিন-রাত কাজ হতো। ১০ হাজার শ্রমিক নিয়ে চলতো এর কার্যক্রম। বর্তমানে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মঞ্জুরীকৃত পদের সংখ্যা দুই হাজার ৮৫৯ জন। সে স্থলে কর্মরত আছেন মাত্র ৬২১ জন শ্রমিক। শতকরা মাত্র ২০ ভাগ জনবল দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে কারখানাটি।  

এরপরও গত ঈদুল ফিতরে ঘরমুখী রেলযাত্রীদের অধিকতর সেবা দিতে কারখানাটিতে মেরামত হয়েছে ১০৭টি যাত্রীবাহী রেলকোচ। যা দিয়ে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করা হয়েছে। এ দিয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলে দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়। এছাড়াও সবকটি যাত্রীবাহী ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করে বেশি বেশি যাত্রীসেবা দেওয়া হয়েছে। ফলে এবারের ঈদে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা বা যাত্রী হয়রানির খবর পাওয়া যায়নি।

রেলওয়ে কারখানার জনবল সংকটে ২০১৪ সালে ‘কাজ আছে, মজুরি আছে’ অস্থায়ী ভিত্তিতে ২০০ শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। এতেও সংকুলান না হওয়ায় ২০২২ সালে আবারও একই নিয়মে ৩০০  শ্রমিক নেওয়া হয়। আর স্থায়ী ৬২১ জন ও অস্থায়ী ৫০০ জন শ্রমিক ঈদুল ফিতরের আগে ১০০টি কোচ মেরামত করা হয়। নতুন শ্রমিক নিয়োগ হওয়ায় অস্থায়ীদের সরিয়ে দেওয়া হয় বলে সূত্র জানায়।

একই সূত্রমতে, এবারেই প্রথম সর্বোচ্চ জনবল সংকটে পড়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকা ছিল ইতিবাচক। দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানার জন্য সাম্প্রতিক নিয়োগ পাওয়া শ্রমিকদের মধ্য থেকে ২৮৯ জনকে এই কারখানায় বদলি করা হয়। এরই মধ্যে তারা কারখানায় যোগদান করেছেন। যা নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার।

রেলওয়ে শ্রমিক লীগ কারখানা শাখার সম্পাদক মোখছেদুল মোমিন জানান, দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল নতুন করে শ্রমিক নিয়োগ। আশাকরি কারখানাটি আগের মতো প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (সিএমই) মুহাম্মদ কুদরত-ই খুদা বলেন, সরকার রেল খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এবারে প্রথমবারের মতো উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ প্রার্থীদের খালাসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অতীতে ওই পদে নিয়োগের যোগ্যতা ছিল ৮ম শ্রেণি পাস। এতে করে আমরা মনে করছি, নতুন নিয়োগকৃতরা দ্রুতই কাজ শিখে দক্ষ হয়ে উঠবেন এবং কারখানার উৎপাদন বাড়াতে ভূমিকা রাখবেন। তিনি আরও বলেন, খুব শিগগিরই রেলের অন্যান্য শুন্য পদেও জনবল নিয়োগ করা হবে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান বলেন, আমরা আশাবাদি। নতুন শ্রমিক পাওয়ায় কারখানার কাজের গতি ফিরে আসবে এবং উৎপাদন বাড়বে।  

তিনি আরও বলেন, পাঁচশ শ্রমিককে ঠিক ছাঁটাই নয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পুনরায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দক্ষদের অস্থায়ী ভিত্তিতে নিতে পারে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।  

বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।