ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নির্বাচন সুন্দর-নিশ্চিত করতেই এ ভিসানীতি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩
নির্বাচন সুন্দর-নিশ্চিত করতেই এ ভিসানীতি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান

ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, নির্বাচন যাতে সুন্দর হয়, তা নিশ্চিত করতেই এ ভিসানীতি করা হয়েছে। আমরাও বিশ্বাস করি, একটি সুন্দর নির্বাচন হবে।

কোনো ষড়যন্ত্র না, কোনো রকমের মাসলম্যানের অভ্যুত্থান না, কিংবা বন্দুকের নল না, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই একটি নির্বাচন হোক, আমরা সেটি চাই।  

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার দেশে কাকে ঢুকতে দেবে, কাকে দেবে না, সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, আমি তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, ভিসা যার যার দেশের একটি নিজস্ব ব্যাপার। সেই দেশে কাকে ঢুকতে দেবেন, কী দেবেন না; সেটি সেই দেশই জানেন। সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই। ভিসা সম্পর্কে তারা যে ঘোষণা দিয়েছেন, এটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সেখানে কিছু বলার নেই।

বুধবার (৩১ মে) সচিবালয়ে নিজ দফতরে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, আওয়ামী লীগ কখনো ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আমরা জনগণের ম্যান্ডেটে বিশ্বাস করি। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি দিয়েছে, সেটিকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। পাশাপাশি আমরা যে একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর নির্বাচন চাই, তাতে যে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়েছে, সে জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।

আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে বলে শোনা যাচ্ছে, এ নিয়ে পিটার হাসের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়। তাদের সিদ্ধান্ত তো আমাদের জানা নেই। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ দেশের মানুষ খুবই খুশি। তারা ভালোভাবে আছে। তারা দেশকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, সঙ্গতকারণেই তার নিরাপত্তার প্রশ্নটি এসেছে। হঠাৎ করে কেন তার (পিটার হাস) সড়ক নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা সিস্টেমটি পরিবর্তন করেছি। আজ তাকে সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করেছি। আমরা কূটনৈতিক পাড়ায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি হতে দেব না। কূটনৈতিক পাড়া ও তাদের চলাচল যাতে নিরাপদ থাকে, সেই ব্যবস্থা আমরা করবো। সে জন্য আমরা কাজ করছি।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত কোন কোন বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাকে সড়ক নিরাপত্তা দেয়া হতো, সেটি সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন। কেন সেটি প্রত্যাহার করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন। আমরা সিদ্ধান্ত এ রকমই নিয়েছি যে যেসব দূতাবাস মনে করে, সড়কেও তাদের নিরাপত্তার দরকার আছে, তাদের আমরা সড়ক নিরাপত্তা দেব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে আমরা সমস্ত দূতাবাসকে জানিয়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের উত্থানের সময় যেসব রাষ্ট্রদূতকে আমরা নিরাপত্তা দিতাম, সেগুলো একইভাবে একই পর্যায়ে সবাইকে দেব। আমরা আবারও বলেছি, কূটনৈতিক পাড়া, তাদের চলাচল ও বিদেশিদের নিরাপত্তা দেয়ার কর্তব্য হলো আমাদের। তাদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্নে চলাচলের বিষয়ে আমরা সবসময় সতর্ক আছি। আমাদের অঙ্গীকার হলো, সব রাষ্ট্রদূত যাতে নিশ্চিন্তে নিরাপদে থাকেন, তার ব্যবস্থা করা।

আনসার রেজিমেন্টের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেটি তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা কিছু সময় চেয়েছেন। কিন্তু আমরা যাদের মাধ্যমে এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো, তারা সুপ্রশিক্ষিত। কাজেই তাদের নিরাপত্তায় রাষ্ট্রদূতরা নির্বিঘ্নে থাকতে পারবেন।

রাষ্ট্রদূতরা এখন পর্যন্ত আবেদন করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা মৌখিকভাবে আবেদন করেছেন। আমরাও তাদের জানিয়ে দিয়েছি, আমরা আবারও কথা বলবো, বসবো। যদি আমরা মনে করি, কোনো জায়গায় তাদের নিরাপত্তার অভাব আছে, সেটা আমরা ব্যবস্থা করবো।

রাষ্ট্রদূতরা ফি দিয়ে নিরাপত্তা নিতে পারবেন, এখন বললেন, তারা আবেদন করেছেন। তাহলে কোন কোন দেশ আবেদন করেছেন, এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, কোনো দেশই অনিচ্ছার কথা বলেনি। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, হঠাৎ করে নিরাপত্তা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি, হঠাৎ করে উঠিয়ে নেয়া হয়নি। সিদ্ধান্ত নিয়ে সুপ্রশিক্ষিত একটি বাহিনী তৈরি করেছি, সেটিই তাদের সুরক্ষায় থাকবে। তাদের হয়তো একটু বোঝার ভুল ছিল, সেটি তাদের বোঝাতে চেষ্টা করেছি। তারা বলেছেন, আমাদের কিছু সময় দেন। আমরা বলেছি, সবসময়েই আপনাদের নিরাপত্তার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা সচেষ্ট আছি। আপনারা যে আবেদন করেছেন, তা আমরা দেখবো। আপনাদের নিরাপত্তার ঘাটতি আছে কিনা, তা দেখে আপনাদের জানাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, মে ৩১,২০২৩
জিসিজি/জেএইচ 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।