ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন: খাদ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৩
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন: খাদ্যমন্ত্রী

ঢাকা: নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বহুমুখী সমস্যা রয়েছে। সেগুলো মোকাবিলার জন্য আমাদের বিস্তৃত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

যা সব খাদ্যকে অন্তর্ভুক্ত করবে। সেজন্য যথাযথ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন। সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার জন্য প্রয়োজন যথাযথ বিনিয়োগ। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল ও স্মার্ট বিনিয়োগের কথা আমরা ভেবে দেখতে পারি।

রোববার (১১ জুন) ‘আইএফসি ১০ম আন্তর্জাতিক নিরাপদ খাদ্য ফোরাম’ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে যৌথভাবে দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরে এসে আমাদের সংবিধান উপহার দেন। যেখানে তিনি অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হচ্ছে সব নাগরিকের খাদ্যের চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা। এছাড়া জনগণের পুষ্টি, উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সব নাগরিকের কর্মক্ষমতা এবং সুস্থ জীবন-যাপনের প্রয়োজনে খাদ্য, পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এরই ধারাবাহিকতায় জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভোক্তার দোড়গোড়ায় ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ গৃহীত হয়। এই আইন বাস্তবায়নে ও সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

তিনি আরও বলেন, আজকের এই আয়োজন পুষ্টি সমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বৈশ্বিক ও সম্মিলিত অঙ্গীকারের একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। খাদ্য নিরাপত্তা সুস্থ্, সমৃদ্ধ, কার্যকর জাতি বিনির্মাণের অন্যতম পূর্ব শর্ত।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছে। তবে এটা শুধু একটি কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রণালয় দিয়ে করা সম্ভব নয়। এটি অংশীদারিত্বমূলক কার্যক্রম। যেখানে কার্যকর নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সৃষ্টিতে সবাইকে একটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি কাজগুলো যথাযথ ও যৌক্তিকভাবে করতে হবে। তা না হলে আমরা যে সুস্থ, সবল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন দেখছি, যাদের হাত ধরে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, তা বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু আজকের অনুষ্ঠানটি নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজন এবং নীতি নির্ধারকদের মধ্য একটি মতবিনিময়ের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, তাই আমি তাদের আহ্বান জানাই, দেশের খাদ্য নিরাপত্ত্র জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোর ওপর যথাযথ আলোকপাত করার জন্য। আমি আশাবাদী এই ফোরামে অনুষ্ঠিত আলোচনা ও এজেন্ডাভিত্তিক সেমিনারে দেশের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের পথ প্রশস্ত করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইয়ুম সরকার, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. সালমা মমতাজ, ডব্লিউএইচওর নিউট্রেশন এবং ফুড সেফটি বিভাগের বিজ্ঞানী সাইমন মোরেস রাজেল, আইএফসির গ্লোবাল ডিরেক্টর ওয়াগনার আলবুখারকী ডে আলমিডা, বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান প্রমুখ।

খাদ্য নিরাপদতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং এ বিষয়ে পাবলিক ও প্রাইভেট সেক্টরের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ক্ষেত্র বাড়াতে প্রতি বছর এই ফোরামের আয়োজন করা হয়। এই সম্মেলনের লক্ষ্য খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি এবং খাদ্য অপচয় সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে অংশীদার, নীতি নির্ধারক এবং শিল্প নেতাদের একত্র করা।

তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অংশের পর তিনটি অংশে দুটি করে মোট ছয়টি প্যারালাল প্যানেল সেশন আয়োজিত হবে। যেখানে নিরাপদতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজন সমন্বয়ে মতবিনিময় এবং আলোচনা হবে। পরবর্তী অংশে অস্ট্রেলিয়ান মাস্টার শেফ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার্স আপ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরীর অংশগ্রহণের একটি সেশন রাখার আয়োজন রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।