ঢাকা, রবিবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ জুন ২০২৪, ২৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিয়োগে যাচাই-বাছাই চায় এইচআরডব্লিউ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৩
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিয়োগে যাচাই-বাছাই চায় এইচআরডব্লিউ

ঢাকা: বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগের আগে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় যাচাই–বাছাইয়ের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সের বাংলাদেশ সফর সামনে রেখে সোমবার (১২ জুন) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময় সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের বিষয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সের। কারণ, বিরোধী রাজনৈতিক দল, সক্রিয় অধিকারকর্মী, গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের ওপর এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো দীর্ঘদিন ধরে ‘গুরুতর মানবাধিকার’ লঙ্ঘন করে আসছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন এইচআরডব্লিউর চিফ অ্যাডভোকেসি অফিসার ব্রুনো স্ট্যাগনো উগার্তে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে শীর্ষস্থানীয় অবদান রাখতে চাইলে বাংলাদেশকে যে জাতিসংঘের মানবাধিকার নীতির ভিত্তিতে যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখি হতে হবে, সে বিষয়ে ল্যাক্রোইক্সের জোর দেওয়া উচিত।

এ জন্য বাংলাদেশকে জাতিসংঘের পাশাপাশি অন্য দেশের সরকারগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে যে, শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নিযুক্ত বাংলাদেশিরা কখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি।

যা হোক, এই পদ্ধতি স্বল্প মাত্রায় বাস্তবায়িত হলেও বিদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নিযুক্ত সব বাংলাদেশি সৈন্যই যে স্বদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি, তা নিশ্চিত করে না। জাতিসংঘের এই পদ্ধতি বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নিয়োগের সময়ই শুধু প্রয়োগ করা হয়। আর বাকিদের বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হয়। তবে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর বিষয়ে জানার পরিধি সীমিত এই সংস্থার।

বাংলাদেশে এই নীতির দুর্বল প্রয়োগের ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর চাকরিতে থাকার সুযোগ পায়, যা জাতিসংঘের নৈতিকতাকে ক্ষুণ্ন করে।

২০১৯ সালে বাংলাদেশে দমন-নিপীড়নের রেকর্ড পর্যালোচনা করে জাতিসংঘের কমিটি বলেছে, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সঙ্গে কাজ করা কর্মীরা প্রায়শই জাতিসংঘের শান্তি মিশনে সেবার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে, যা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

এই কমিটি একটি স্বাধীন যাচাই-বাছাই পদ্ধতির সুপারিশ করে বলেছে, যেসব ব্যক্তি বা ইউনিটকে নির্বাচন করা হয়, তারা নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম বা অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল না, তা নিশ্চিত করতে হবে।

জাতিসংঘের উচিত বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে শান্তি মিশনে পূর্বে নিযুক্ত র‍্যাব সদস্যদের বিষয়ে তথ্য চাওয়া। এরপর র‍্যাবের যেকোনো সদস্যকে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধ করা।

জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের উচিত শুধু উচ্চপর্যায়ের কমান্ডারদের নয়, শান্তিরক্ষা মিশনের সমস্ত বাংলাদেশি সেনাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

তবে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের জন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া বৃদ্ধি এবং র‍্যাবের সঙ্গে যুক্ত কাউকে জাতিসংঘে নিষিদ্ধ করতে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আহ্বানে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৩
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।