ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৬ মাসের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো দুর্ঘটনায় তেলবাহী জাহাজটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২৩
৬ মাসের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো দুর্ঘটনায় তেলবাহী জাহাজটি

বরিশাল: ঠিক ছয় মাসের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো দুর্ঘটনার শিকার হলো সাগর-নন্দিনী-২ নামক তেলবাহী ট্যাংকার।

গেল বছরের ২৫ ডিসেম্বর ভোলার মেঘনা নদীতে একটি নৌযানের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিলো সাগর নন্দিনী।

তখন এই  ট্যাংকারটিতে সাড়ে ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল ছিল।  

দুর্ঘটনার ৭ দিন পর ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ায় ট্যাংকারটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বলে জানিয়েছিলেন বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক মো. আবুল সালাম।

আর এর ঠিক ছয়মাস যেতে না যেতেই  ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায় সাগর নন্দিনীতে।   আর এবারও ট্যাংকারটিতে ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল ছিল। বিস্ফোরণের পর জাহাজের পেছনের অংশ পানিতে তলিয়ে যেতে থাকলে, সেখানে তেল অপসারণের পাশাপাশি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে অন্য জাহাজের সহায়তায় ট্যাংকারটিকে ভাসিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।

এদিকে ভোলার দুর্ঘটনার পর তেলবাহী এই নৌযানটিতে থাকা ১২ জন স্টাফকে জীবিত উদ্ধার করেছিলো কোস্টগার্ড ও পুলিশ। আর এবারে জাহাজটিতে থাকা ৯ জনের মধ্যে ৫ জনকে দগ্ধ অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ রয়েছেন ৪ জন।

রোববার (২ জুলাই) সকাল থেকে কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলসহ সদস্যরা সুগন্ধা নদীতে তাদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন।

নিখোঁজ জাহাজের প্রথম শ্রেণির ড্রাইভার সরোয়ার আকরামের ভাই মাসুম বিল্লাহ বলেন, এখানে শুধু তেল উদ্ধার করা হচ্ছে মানুষগুলোকে উদ্ধারে কোনো তৎপরতা দেখছি না। আমরা ভাই জীবিত না থাকলে তার মরদেহটা তো পাব। সেটাই আমরা চাই।

অপর তিন নিখোঁজের স্বজনদের দাবি, মাস্টার ব্রিজের যে অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে নদীতে পড়ে ডুবে গেছে, সে অংশে তারা আটকে থাকতে পারেন। ঘটনার পর ১৯-২০ ঘণ্টা পার হলেও সেটির সন্ধান কেউ করছে না। আমরা স্বজনদের জীবিত না পেলে মৃত অবস্থায় হলেও দেখতে চাই।

যদিও কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফায়েত জানিয়েছেন, সুগন্ধা নদীতে ডুবুরি দল নামানো হয়েছে, সাধ্য অনুযায়ী নিখোঁজদের সন্ধানে তারা তৎপর রয়েছেন এবং উদ্ধার অভিযানে ধাপে ধাপে নদীর বিভিন্ন অংশে চালানো হচ্ছে।

এদিকে জাহাজটিতে থাকা ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেলের মধ্যে ৪ লাখ লিটার তেল সরানো হয়েছে গত রাতেই। বাকি তেল বিকল্প পদ্ধতিতে সরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।  

এখন আর জাহাজটি থেকে তেল নদীতে ছড়িয়ে পরার শঙ্কা নেই  বলে জানিয়েছেন পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি সাগর-নন্দিনী-৩ নামক জ্বালানি তেল বোঝাই ট্যাংকারের ইঞ্জিনরুমে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। যেখানে ঘটনাস্থলে ৭ জন আহত ও ২ জন মারা যান।  

এছাড়া চলতি বছরের ১১ মে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে এমটি ইবাদি-১ নামক জ্বালানি তেল বোঝাই ট্যাংকারের ইঞ্জিনরুমেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যার পর ঘটনাস্থল থেকে তাৎক্ষণিক ২ জনের মরদেহ ও তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা
হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২৩
এমএস/এসএএইচ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।