ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘সরকারি চাকরি সংশোধন বিল’ পাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২৩
‘সরকারি চাকরি সংশোধন বিল’ পাস

ঢাকা: স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে দায়ের করা ফৌজদারি মামলায় আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করার আগে তাকে গ্রেপ্তার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল–২০২৩’ পাস হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের জন্য তোলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

 

বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে সংসদে পাস হয়।

এ বিলে স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, অবসর সুবিধা সরকারি চাকরি আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

সংশোধনী প্রস্তাবে জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, এ আইন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ গঠনের আগে যে কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়।  এজন্য কারো অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের অভিযোগ নেওয়ার আগে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এটা আইনের চোখে সবাই সমান ওই নীতির পরিপন্থি।

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, জনপ্রশাসনে আজ চরম বিশৃঙ্খলা। তারা ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স মানেন না।  প্রজাতন্ত্রের কিছু কিছু কর্মচারী নিজেকে স্বঘোষিত মার্শাল আইয়ুব খান বা তার অনুসারী ভাবেন।  তাদের ইচ্ছেমত স্বাধীন ও জনস্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।  কোন কোন মন্ত্রণালয়ে গেলে দেখা যায় সচিব, অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্ম সচিব মন্ত্রীর স্বাক্ষর থাকার পরেও ঠিকমতো কাজ করেন না, গুরুত্ব দেন না।  জেলা ও উপেজলা পর্যায়ের কর্মকর্তা কোথাও গেলে তাদের গাড়ির বহর দেখে মনে হয় সরকারের কোনো উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রী সেখানে গেছেন।  বেশিরভাগ দপ্তরের জনপ্রতিনিধিদের প্রাপ্য সম্মান দিতে ইতস্ততবোধ করেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মন্ত্রীদেরও অসহায় দেখা যায়। তাদের (মন্ত্রী) ইচ্ছা বা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতেও গড়িমসি করেন।

তিনি বলেন, সরকার মনে করে জনপ্রশাসন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে তাদের হেফাজত করবে। এটা ভালো লক্ষণ নয়। এতে জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়বে। প্রতিষ্ঠানগুলো ভিত্তি দুর্বল হবে, জনস্বার্থ বিঘ্নিত হবে। কীভাবে কিছু কিছু আমলাদের কাছে আমাদের সংসদ সদস্যরা হেয় প্রতিপন্ন হন। এটার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দিলে জনপ্রতিনিধি ও জনগণ সম্মানিত হবে।

সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল, ২০২৩-এ বলা হয়, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ১৫, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪ ও ৪৫ ধারার বিধান স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকারের অধীন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে।

২০১৮ সালের আইনের ১৫ ধারায় বলা আছে, সরকারি গেজেটে আদেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি কর্মচারীর বা সব সরকারি কর্মচারীর কোনো একটি অংশের জন্য বেতন, ভাতা, বেতনের গ্রেড বা স্কেল, অন্যান্য সুবিধা ও প্রাপ্যতা বা অবসর সুবিধা সম্পর্কিত শর্তাদি নির্ধারণ করতে পারবে সরকার।

আর ৪১ ধারায় বলা আছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে, তাকে গ্রেপ্তার করতে হলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে ৷

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২৩
এসকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।