ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩২, ১৬ জুন ২০২৫, ১৯ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

ইরানে হামলা নেতানিয়াহুর ‘লাস্ট কার্ড’

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:১৫, জুন ১৪, ২০২৫
ইরানে হামলা নেতানিয়াহুর ‘লাস্ট কার্ড’ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

ঢাকা: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরান আক্রমণ করে ‘লাস্ট কার্ড’ খেলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেছেন, যুদ্ধের মধ্য দিয়েই তিনি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চাইছেন।

সে কারণেই এই আক্রমণ।  

শনিবার (১৪ জুন) ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে বাংলানিউজকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় ইমতিয়াজ আহমেদ এ কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক এ অধ্যাপক বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এখন যুদ্ধ চান। যুদ্ধের মাধ্যমেই তিনি ইসরায়েলকে টিকিয়ে রাখতে চান। এখানে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও জড়িত। সে কারণে ইরান আক্রমণ করে তিনি এখন এই ‘লাস্ট কার্ড’ খেলেছেন।
 
‘ইসরায়েল হঠাৎ করেই ইরান আক্রমণ করেছে। এখন দেখতে হবে, এটা কতদিন স্থায়ী হয়। স্বল্পমেয়াদি হলে একরকম অবস্থা হবে। আর দীর্ঘমেয়াদি হলে, আর এক রকম অবস্থা হবে। ’

ইরান এখন কী করতে পারে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ইরানে পরমাণু কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে ইসরায়েল এই হামলা করেছে। এখন ইরান একটি সঙ্কটে পড়েছে। এই অবস্থার মধ্যে ইরান যদি সত্যিই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে ফেলে, বা করতে বাধ্য হয়, তখন ইসরায়েল সারা বিশ্বকে দেখাতে পারবে যে, তারা যেটা বলেছিল, সেটাই সঠিক। সে কারণে ইরান একটি সঙ্কটে পড়েছে।

যুদ্ধ কীভাবে বন্ধ হতে পারে- মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুদ্ধ বন্ধ কঠিন কাজ। তবে এই যুদ্ধ বন্ধে বিভিন্ন দেশের জনগণকে চাপ প্রয়োগের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের জনগণকে যুদ্ধবিরোধী সমাবেশ করে সেসব দেশের সরকারের প্রতি চাপ প্রয়োগ করতে হবে। একটি বিশ্ব জনমত গঠন ছাড়া যুদ্ধ বন্ধ সহজ নয়।

ইরান যুদ্ধে বিশ্বের বড় বড় শক্তিগুলোর ভূমিকা কী হতে পারে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে বিশ্বের বিগ পাওয়ারগুলো কোন দিকে যাবে, সেটা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হবে। প্রতিটি দেশই নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করেই নিজ নিজ অবস্থান নেবে।

ইরান পরমাণু অস্ত্র বানানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এমন আশঙ্কাসহ দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব থেকে শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে দেশটির বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায় আগ্রাসনবাদী ইসরায়েল। এতে ৮০ জন নিহত ও ৩২০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান, সেনাপ্রধান, পরমাণু বিজ্ঞানীসহ শীর্ষ অনেক কর্মকর্তা ছিলেন।

রাতে এর পাল্টা জবাব দেয় ইরান। ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হতে থাকে ইসরায়েলে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের মুখপাত্র এভিসাই আদরাই সামাজিকযোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানান, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে দুই দফায় একশোর চেয়ে কিছু কম ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে ইরান।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডারের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমাদি বাহিদি দাবি করেন, অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি এর আওতায় তিনটি ইসরায়েলি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘাঁটিগুলোতেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার এবং ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সেন্টার অবস্থিত। এতে তিনজন ইসরায়েলি মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৬০ জনেরও বেশি।

শুক্রবারের পর শনিবারও দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি আঘাত হানার দাবি করেছে।  

টিআর/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।