ফরিদপুর: জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠেছে জেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও এখানে রাতেও জাতীয় পতাকা উড়তে দেখা যায়।
শুক্রবার (২১ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় ও সাধারণ পথচারীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভবনে পতাকা উড়তে দেখে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সকাল ৭টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সারাদিন সারারাত ধরে জাতীয় পতাকা উড়তে থাকে। শনিবার (২২ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত একটানা পতাকা উড়ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ফরিদপুর জেলার সভাপতি শেখ ফয়েজ আহমেদ বলেন, আমার একজন স্বজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শুক্রবার রাতে তাকে দেখে সাড়ে ১২টার দিকে বাসায় ফিরছিলাম। এ সময় হঠাৎ চোখে পড়ে গভীর রাতেও জাতীয় পতাকা উড়ছে। বিষয়টি দেখে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে খুব খারাপ লাগল। এটা চরম অবহেলা। এ সময় কর্তৃপক্ষকে জানানোর চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এভাবে সকালেও জাতীয় পতাকা উড়তে দেখা যায়। আর নামানো হয়নি।
এ বিষয়ে প্রধান অফিস সহকারী স্বপন বলেন, পতাকা উত্তোলন ও নামানোর দায়িত্ব ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমানের। বিষয়টি তিনি ভালো বলতে পারবেন।
ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিষয়টি ভালো জানা নেই। ওই দিন পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব ছিল সজিব মোল্লার। তিনি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।
হাসপাতালের সিকিউরিটি গার্ড মো. সজিব মোল্লা বলেন, বুধবার রাতে নাইট ডিউটি শেষে বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে আমি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে চলে যাই।
সন্ধ্যার আগে পতাকা নামানোর দায়িত্ব ছিল নিরাপত্তা প্রহরী গেলাম সরোয়ারের। তিনি সম্ভবত পতাকা আর নামাননি। যার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সারাদিন ও সারারাত ধরে পতাকা উড়ছিল। শনিবার সকালেও পতাকা উড়ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের নিরাপত্তা প্রহরী ও পতাকা নামানোর দায়িত্বে থাকা গোলাম সরোয়ার বলেন, আমার ভুল হয়েছে। এমন ঘটনা আর হবে না।
ফরিদপুর নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কান্তি বালা বলেন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও নামানো রাষ্ট্রীয় নীতিমালা রয়েছে। দুই তিন ধরে রাত-দিন একটানা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে রাখা চরম অবহেলা-গাফলতি। চরম অবমাননার শামিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী বলেন, বিষয়টি জানা নেই। যদি এমনটি হয়, তাহলে এটা চরম দায়িত্ব অবহেলা ও অবমাননার শামিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. এনামুল হক বলেন, আসলে আমার বিষয়টি জানা নেই। এখনই এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২৩
এসআইএ