ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

চাইলেই পলিটিকাল কাউকে ডিসি করতে পারি না: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৩
চাইলেই পলিটিকাল কাউকে ডিসি করতে পারি না: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: রাতারাতি কেউ জেলা প্রশাসক (ডিসি) হয় না। চাইলেই পলিটিকাল কাউকে ডিসি নিয়োগ করতে পারবো না।

ফিটলিস্ট তৈরি করে যোগ্যতা অনুযায়ী ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়।

রোববার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে গণমাধ্যমে কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত এক সংলাপে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন।

জেলা প্রশাসক নিয়োগে বৈষম্য ও স্বজনপ্রীতি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিছু কর্মকর্তাকে ডিসি হিসেবে পদায়নের পর তুলে নেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মাঠ প্রশাসন দেখে তারা বিষয়গুলো যাচাই বাছাই করে। একটি মানুষকে যখন ডেস্কে কাজ করতে দেখেন তার এক ধরনের পারফরমেন্স থাকে। মাঠের কাজের ধরণ কিন্তু ভিন্ন রকম।

যাচাই বাছাই করেই ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। দুয়েকজন বিভিন্ন কারণে ফেল করে। এদের সংখ্যা কিন্তু কম, তারা হয়তো ওখানে গিয়ে অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে পারছেন না। অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে যেটা আমাদের অনেক সময় অ্যাম্বারেসও করে। সে সমস্ত ক্ষেত্রে আমরা তুলে নিয়েছি যাতে করে আরও ক্রিটিক্যাল সিচুয়েশেনের তারা যেন নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তাহলে মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং আরও বাড়তে পারে। আমরা চেয়েছি যাতে করে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনে যাতে করে আমাদের কর্মকর্তারা চমৎকারভাবে কাজ করতে পারে এবং একই সাথে কিন্তু আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে চালিয়ে নিতে পারে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি কয়েক দফায় ২৮ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, যাদের তুলে নেওয়া হয়েছে তাদের ২০ জন ছিল ২২ ব্যাচের। আশা করছি এ মাসের মধ্যেই তারা যুগ্মসচিব হয়ে যাবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে কিছু অভিযোগ ছিল, সেগুলোয় যা দেখেছি, সেটা রাখা ঠিক হবে না। জনমনে বেশকিছু অস্বস্তি আছে সেজন্য আমরা তুলে নিয়েছি। দুয়েকজন তুলেছি মনে হয়েছে তারা ডেস্কে যেভাবে কাজ করেছে ওখানে গিয়ে সেভাবে পারছে না। নিয়মের বাইরে, আইনের বাইরে, বিধিবিধানের বাইরে কিন্তু কোনো কিছু করিনি। ডিসি কিন্তু একদিনে হয় না। মাঠ প্রশাসনে তাদের দুই বছর কাজ করতে হয়।

ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, এখন আমরা রাইট ম্যানকে রাইট প্লেসে, অর্থাৎ যোগ্য লোকগুলোকে দেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে করে স্মুথলি সরকারের ভাবমূর্তি প্রশাসন আমারা বজায় রাখতে পারি, সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য। প্রশাসনের ভাবমূর্তি প্রতিনিয়তই উন্নত হচ্ছে, ভালো হচ্ছে, এ উন্নয়ন হওয়ার গতিধারা সেটা যেন ঠিক থাকে সেজন্য আমরা এই কাজগুলো করে থাকি। এখন যারা ডিসি হচ্ছেন তাদের নিয়োগ হয়ত অন্য সরকারের সময় হয়েছে। যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের কতটুকু প্রশিক্ষিত করেছি সেটা অনুযায়ী তাদের পদায়ন করে থাকি। সেজন্য একথা বলা কোনো স্কোপ নেই, কারণ রাতারাতি কেউ ডিসি হয় না। আমি চাইলেই পলিটিকাল কাউকে ডিসি করতে পারবো না।

তিনি আরও বলেন, সরকারের পলিসি রয়েছে, আমরা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই। সেটার জন্য আমরা বদ্ধ পরিকর। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে সেটি ব্যক্ত করেছেন। আমরা কিন্তু সেদিকে যাচ্ছি। সেটির জন্য কিন্তু সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া আছে যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো অতিকথন বলা যাবে না, যেটি কিনা প্রশাসনে ঝামেলার সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য অত্যন্ত সতর্কতার সাথে সুন্দরভাবে আপনারা কাজ করবেন। প্রফেশনালিজম যেটি সেটি শো করবেন। আপনাদের যে উন্নত ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে সেই ট্রেনিং অনুযায়ী কীভাবে জনগণকে সেবা করবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষ কাকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবেন সেটি জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের কর্মকাণ্ডগুলো কিন্তু কন্টিনিউ করতে থাকে। সেই কর্মকাণ্ডগুলো উন্নয়ন প্রশাসন যথাযথভাবে প্রশিক্ষিত করা আছে, যাতে কোনো ফাঁদে পা না দিয়ে তারা যাতে সুন্দরভাবে কাজগুলো করতে পারে এবং যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দেয়। কেউ যাতে কোনো ওভার রিঅ্যাক্টিং না হয় সেটিও আমাদের লক্ষ্য করা। অনেক প্রজেক্ট আছে যেগুলো যথাসময়ে শেষ করতে হবে। সেজন্য তাদেরকে সময়ের ব্যবহার, মানুষের সাথে ভালো আচরণ, উন্নত সেবা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার যেভাবে চাইবে সেভাবে চলবে। আমাদের তরফ থেকে আমরা একটি নির্বাচন সুন্দর করার জন্য যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার ততটুকু করছি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পিএস নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। বেছে বেছে সেরা অফিসারদের সেখানে দেওয়া হয়েছিল। ভালো কর্মকর্তাদের ডিসি করা হচ্ছে। এখানে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। সেখানে আমরা দেখছি সমন্বয় ভালোমতো হচ্ছে এবং বড় রকমের বিপদ ঘটে যাবে। কেউ কেউ ইতোমধ্যে এম্বারাস করেছেন আর এ ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে সেক্ষেত্রে আমরা মনে করেছি এটা সমস্যা।

বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনায় ছিলেন ও সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ৩০ জুলাই, ২০২৩
এমআইএইচ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।