ঢাকা: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের সহধর্মিণী, বিশিষ্ট লেখক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা পান্না কায়সারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন সর্বস্তরের মানুষ।
রোববার (৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে পান্না কায়সারের মরদেহ শহীদ মিনারে আনা হয়।
এ সময় ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল শ্রদ্ধা জানায়। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সংস্কৃতি মঞ্চ, রক্তধারা ৭১, প্রজন্ম ৭১, শিশু একাডেমি, ঢাকা থিয়েটার, ছায়ানটসহ শতাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সংবাদ পরিবারসহ আরও শতাধিক সংগঠন শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের নেতৃত্ব জাতীয় প্রেসক্লাব শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
এ সময় শ্যামল দত্ত বলেন, স্বামীকে হারিয়েও তিনি নিরন্তর চেষ্টা করে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে। জীবনভর লড়াই চালিয়ে গেছেন তিনি। খেলাঘর সংগঠনের অভিভাবক ছিলেন তিনি।
পরিবারের সদস্যদের পক্ষে লেখক শাহরিয়ার কবির বলেন, শহীদ সন্তানদের নিয়ে প্রজন্ম-৭১ গড়ে তুলেছিলেন পান্না কায়সার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে নিরন্তর লড়াই করে গেছেন।
অধ্যাপিকা পান্না কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার বলেন, আমার মা কষ্ট থেকে শক্তি অর্জন করেছেন, কোনোদিন প্রকাশ করেননি। মাত্র ২১ বছরে তিনি বিধবা হন, তারপর এ বাংলাদেশে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তিনি লড়াই করে গেছেন। এরই মধ্যে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাসের বাইরে সঠিক ইতিহাস প্রচারে নিরন্তর লড়াই করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শহীদুল্লা কায়সারের সঙ্গে পান্না কায়সারের বিয়ে হয়। সেদিন ঢাকা শহরে কারফিউ ছিল। পুরো দেশ তখন গণ-আন্দোলনে উত্তাল। শহীদুল্লা কায়সারের হাত ধরে তার পরিচয় আধুনিক সাহিত্যের সঙ্গে, রাজনীতির সঙ্গে। তার সংসার জীবন স্থায়ী হয় মাত্র দুই বছর ১০ মাসের মতো। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আলবদর বাহিনীর সদস্যরা শহীদুল্লা কায়সারকে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তিনি আর ফেরেননি।
এরপর পান্না কায়সার একা হাতে মানুষ করেন তার দুই সন্তান শমী কায়সার ও অমিতাভ কায়সারকে। এছাড়া তিনি ১৯৭৩ সাল থেকে শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ১৯৯০-তে তিনি এ সংগঠনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পান্না কায়সার ১৯৫০ সালের ২৫ মে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় অবদান রাখার জন্য তাকে ২০২১ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২৩
এনবি/আরবি