ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

রুমা ও থানচি সড়কে পাহাড় ধস, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৩
রুমা ও থানচি সড়কে পাহাড় ধস, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

বান্দরবান: বান্দরবানে টানা এক সপ্তাহের ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলায় বন্যা সৃষ্টি হলেও গত দুইদিন ধরে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।  

এদিকে সাংগু ও মাতামুহুরী নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে জেলার নিম্নাঞ্চল থেকে ব্যানার পানি নামার কারণে সাধারণ জনগণ আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজ নিজ বাড়িতে ফেরত যাচ্ছে।

তবে বন্যার কারণে সর্বত্র এখন ময়লা আর আবর্জনায় ভরপুর হয়ে গেছে।

বন্যা পরবর্তী বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট সৃষ্টির পরপরই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে করে বিভিন্ন এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও পানি বিশুদ্ধ করে জার ভর্তি করে বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকায় বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে রুমা ও থানচি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে গত ৯ আগস্ট থেকে।  

এদিকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় রুমা ও থানচি উপজেলার যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। অন্যদিকে সড়ক মেরামতে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন (২০ ইসিবি)।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, টানা প্রবল বর্ষণে জেলার অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পাহাড় ধসে বান্দরবান-থানচি সড়কের মিলনছড়ি থেকে চিম্বুক-নীলগিরি-পোড়া বাংলা এলাকাসহ বান্দরবান-রুমা ও থানচি সড়কের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসে সড়ক ভেঙে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চিম্বুক এলাকার বাসিন্দা ইয়াং ম্রো বলেন, কয়েকদিনের টানা বর্ষণের ফলে বান্দরবান-রুমা ও থানচি সড়কের বেশ কিছু এলাকা ভেঙে গেছে। সড়কের বেশিরভাগ স্থানে ধসে পড়ায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

টংকাবতি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্লুকান ম্রো জানান, ভারী বর্ষণের কারণে সড়ক ধসে যাওয়ায় সড়ক পথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না, এলাকাবাসী খুবই অসহায় অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে গাছ ভেঙে পড়ার কারণে এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ বিভিন্নস্থানে আর মোবাইল ও ইন্টারনেট এর গতি অনেকটাই কম।

বান্দরবান জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, টানা বর্ষণে গত এক সপ্তাহে বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধস ও পানিতে ভেসে ১০জন নিহত ও ৩১ জন আহত হয়েছে আর পাহাড় ধসে ১৪০৬টি ঘর সম্পূর্ণ ও ৫১৭৩টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ক্ষতিস্তদের সাহায্য সহযোগিতা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে প্রশাসন কাজ করছে বলে জানায় প্রশাসন।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, বন্যায় বান্দরবানের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আর এই ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা এবং রুমাও থানচির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করা এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।  

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, এই দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পৌরসভা, রেডক্রিসেন্ট, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলসহ সব প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে আর সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আশাকরি দ্রুত সময়ে বান্দরবান আগের রূপে ফেরত আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।