বরিশাল: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের এক কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সহকর্মীরা।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে এ মিছিল করেন তারা।
এসময় শেবাচিম হাসপাতালের সরকারি কর্মচারী সমিতি (১৭-২০ গ্রেড) সভাপতি রুহুল আমিন লিখন ও ইউসুফ আলী মিলনসহ দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ মিছিলকারীরা জানান, দুইদিন আগে হাসপাতালের প্যাথলজির ভেতরে বহিরাগতরা ঢুকে রোগীর শরীর থেকে রক্ত টানার প্রতিবাদ জানায় অফিস সহায়ক মো. বায়েজিদ। ওইসময় বহিরাগতদের সঙ্গে জোট বেঁধে আইএইচটির কতিপয় যুবক মিলে তাকে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি হাসপাতাল প্রশাসন পর্যন্ত পৌঁছালে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই ঘটনার সূত্র ধরে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরের মিশন রোড এলাকায় বসে দুর্বৃত্তরা পুনরায় বায়েজিদের ওপর হামলা চালায়। পরে তাকে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার বিচার ও হাসপাতাল কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
এদিকে, মিছিলে শেষে বিক্ষোভকারী হাসপাতাল প্রশাসনের কাছে তাদের দাবির কথা তুলে ধরেন। দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
আহত বায়েজিদ বলেন, গত শনিবার বিকেলে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ভেতরে ইউনিফর্ম ছাড়া অপরিচিত দুটি ছেলে রোগীর শরীর থেকে ব্লাড সংগ্রহ করছিল। যা দেখতে পেয়ে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের ইমন ও ইয়ামিন নামে বেসরকারি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরি ও ম্যাটস্ এর শিক্ষার্থী বলে জানান। কিন্তু অনুমতি ছাড়া ভেতরে ঢোকার কারণ জানতে চাইলে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বিষয়টি তাৎক্ষণিক আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। তবে এরই মধ্যে ইমনের ভাই আবু ইউসুফ ইফতি তার সহযোগীদের নিয়ে আমাকে খুঁজতে হাসপাতালের প্যাথলজিতে আসলে সম্ভাব্য হামলা এড়াতে সেখান থেকে আমি চলে যাই।
তিনি আরও বলেন, পরদিন সোমবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের দিকে থেকে মেডিক্যাল ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের মুখে ইফতিসহ বেশ কয়েকজন যুবক আমার পথরোধ করে। সেখানে মারধর করে আমার সঙ্গে টাকা-পয়সা ও মোবাইল নিয়ে যায়। পরে হাসপাতালের স্টাফ সাগর ও এক পুলিশ সদস্য আমাকে উদ্ধার করে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরবর্তী হামলার শঙ্কায় রয়েছি।
তিনি হামলার ঘটনার বিচার দাবি করে বলেন, প্যাথলজি বিভাগে সরকারি আইএইচটির যেসব শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপ করছেন তাদের সঙ্গে কোনো বিরোধ হয়নি, অথচ বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টায় কিছু শর্ট ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ মোবাইলে ধারণ করা কিছু ভিডিও দেখেও আমার কথার প্রমাণ মিলবে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে ইয়ামিনের মোবাইলে কল করা হলে তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে জানিয়েছেন।
হাসপাতাল প্রশাসন বলছে, গঠিত তদন্ত কমিটি সবকিছু খতিয়ে দেখবে এবং যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
এমএস/এসএম