ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সংজ্ঞা জটিলতায় দেশের বেশির ভাগ নদীই ধ্বংস: বাপা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
সংজ্ঞা জটিলতায় দেশের বেশির ভাগ নদীই ধ্বংস: বাপা

ঢাকা: সংজ্ঞা জটিলতায় পড়ে দেশের বেশির ভাগ নদীই আজ ধ্বংস বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব নদী দিবস–২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকায় ‘র‌্যালি, বুড়িগঙ্গা নদীর বর্তমান অবস্থা সরজমিনে পরিদর্শন’ কর্মসূচি থেকে এ কথা বলা হয়।

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বাপার সহ-সভাপতি যথাক্রমে মহিদুল হক খান, অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম ও স্থপতি ইকবাল হাবিব, বাপা যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রসুল, যুগ্ম সম্পাদক ও গ্রীন ভয়েসের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক হুমায়ুন কবির সুমন ও বাপার নির্বাহী সদস্য জাভেদ জাহান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাপা জাতীয় কমিটির সদস্য ও ক্লিন রিভার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ মহাজন, সবুজ পাতার বায়োজিদ, বাপা জাতীয় কমিটির সদস্য যথাক্রমে হাজী আনসার আলী, আরিফুর রহমান, শাকিল কবির, ফাহমিদা নাজনিন তিতলি এবং গ্রীন ভয়েস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মামুন, সাধারণ সম্পাদক জয়া সরকার ও ঢাকা কলেজ গ্রীন ভয়েসের সভাপতি আব্দুল আউয়াল।

এদিন সকালে বাহাদুর শাহ পার্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে সকাল একটি র‌্যালি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল পর্যন্ত আসে। এরপর সদরঘাট থেকে নৌকাযোগে বুড়িগঙ্গা নদী সরজমিনে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে বসিলা ব্রিজে কর্মসূচি শেষ হয়।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, নদী পরিবেশের অবিচ্ছিন্ন অঙ্গ। নদীর সংজ্ঞা জটিলতায় পড়ে দেশের বেশির ভাগ নদীই আজ ধ্বংস। দ্রুত সংজ্ঞা জটিলতা কাটিয়ে যে নদীগুলো বেঁচে আছে সেগুলোকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা এবং দখল ও দূষণ হওয়া নদীগুলোকে উদ্ধারের জোরালো দাবি জানান এবং তিনি দেশের নদীগুলোকে মাছ চাষ উপযোগী করার দাবি জানান সরকারের প্রতি।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার চারপাশের নদীগুলো সরকারের অকার্যকর যন্ত্রের কারণে দখল-দূষণে জর্জরিত। সরকারের সদিচ্ছা ও একটি কঠিন পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের নদীগুলো রক্ষা করা সম্ভব। বাপার আন্দোলনের ফলেই একদিন এ নদী কমিশন গঠিত হয়েছিল; বাপা ও দেশের পরিবেশবাদীদের আন্দোলনে নদী কমিশন স্বাধীন ও শক্তিশালী হবে।

মহিদুল হক খান বলেন, যারা নদীগুলোকে দখল ও দূষণের মাধ্যমে গ্রাস করছে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। আগে নদী তার পরে নগরায়ন। নদীকে মেরে নগরায়ন চাই না। আমরা সরকারের কাছে দেশের নদীরক্ষার দাবিগুলো তুলে ধরবো।

অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম তথ্য ভিত্তিক ও সঠিকভাবে নদীর সীমানা চিহ্নিত করে ঢাকাসহ সারাদেশের নদী উদ্ধারের জোর দাবি জানান।

স্থপতি ইকবাল হাবিব নদীর প্রকৃত সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দেশের দখল হওয়া নদীগুলোকে উদ্ধারের দাবি জানান। নদীর চার পাশ দখলমুক্ত করে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করার আহ্বান জানান। ঢাকা সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসার ময়লা যেন নদীতে না ফেলা হয় সেটি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অবহেলার জন্য দেশের নদীগুলো আজ দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের নদী ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

আলমগীর কবির নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত করে প্রবাহমান করাসহ সব নদীর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার জোর দাবী জানান। দেশের নদীগুলোকে বাঁচানোর জন্য নদীর পাড়ের মানুষদের স্থানীয় নদীর পাড়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
আরকেআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।