ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ঘোষিত মজুরি বিষয়ে আপত্তিপত্র দিলেন পোশাকশ্রমিক নেতারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৩
ঘোষিত মজুরি বিষয়ে আপত্তিপত্র দিলেন পোশাকশ্রমিক নেতারা

ঢাকা: পোশাকশ্রমিকের জন্য ঘোষিত মজুরি ১২,৫০০ টাকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে তা পুর্নবিবেচনার জন্য আপত্তিপত্র দিয়েছে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর জোট ‘মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন’। গেজেট হবার আগে পোশাকশ্রমিকদের মজুরি পুনর্বিবেচনা ও ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ এবং ঘোষিত মজুরির নানান সীমাবদ্ধতা ও অসঙ্গতি তুলে ধরে মজুরি বোর্ড ও শ্রম মন্ত্রণালয়ে এই আপত্তিপত্র জমা দেন জোটের নেতারা।

রোববার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় আপত্তিপত্র প্রথমে মজুরি বোর্ডে এবং পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়।

মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের হাতে আপত্তিপত্র দেওয়ার আগে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের জোট মজুরি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সরকারকে মজুরি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। ঘোষিত মজুরি ১২৫০০ টাকা শ্রমিকের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে না।

২০১৮ ও ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মজুরি পুনর্বিবেচনা করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও গেজেট হবার আগে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন শ্রমিক নেতারা। একইসাথে হামলা-মামলা প্রত্যাহার করে মজুরি পুনর্বিবেচনার দাবি জানান তারা।



মজুরি বোর্ডে জমা দেওয়ার পর একই আপত্তিপত্র শ্রম প্রতিমন্ত্রী বরাবর সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদের কেন্দ্রীয় পত্র গ্রহণ ও অভিযোগ শাখায় জমা দেওয়া হয়।

আপত্তিপত্র প্রদান কর্মসূচিতে অংশ নেন ১১ সংগঠনের জোট মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের সমন্বয়ক তাসলিমা আখতার, জোটের সদস্য সচিব সাদেকুর রহমান শামীম, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাঈল, ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সবুজ, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ, বিপ্লবী গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা প্রদীপ রায় এবং গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন প্রমুখ।

মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের দাবিগুলো হলো:

১. অবিলম্বে পোশাকশ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করতে হবে। বেসিক ৬৫% করতে হবে।

২. অবিলম্বে মজুরি আন্দোলনে শ্রমিক হত্যার বিচার, আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মামলা-হামরা-গ্রেপ্তার-ছাঁটাই নির্যাতন ও ১৩ (১) ধারা প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৩. গ্রেড বৈষম্য বন্ধে মোট ৭ গ্রেডের বদলে ৫ গ্রেড করতে হবে। সকল গ্রেডে একই হারে মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে। গ্রেড ১ ও ২ বহাল রেখে ৫ ও ৬ নং গ্রেডকে ৩ ও ৪ নং গ্রেড অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৪. সোয়েটার ও পিস রেটে কর্মরত শ্রমিকদরে কাজের আগে মজুরি নির্ধারণ ও ডাল সিজনে পূর্ণ বেসিক দিতে হবে। সোয়েটারে জ্যাকার্ড শ্রমিকদের ৩ শিফট ও একই হারে মজুরি বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে।

৫. ইপিজেড-ইপিজেডের বাইরে সবখানে সমান হারে মজুরি বৃদ্ধি ও মূল মজুরির ১০% ইনক্রিমেন্ট দিতে হবে। বাধ্যতামূলক অংশীদারত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করতে হবে।

৬. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে চাল, ডাল, তেল, শিশুখাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য রেশন কার্ডের মাধ্যমে বিতরণের লক্ষ্যে স্থায়ীভাবে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য জীবনবীমা, চিকিৎসা, শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতে সরকার ও মালিককে উদ্যোগ নিতে হবে।

৭. শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে মালিক সরকার ও বায়ারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৩
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।