ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এক বছরে শিশিরের অনলাইন গেমের ফাঁদে ২০ কিশোরী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
এক বছরে শিশিরের অনলাইন গেমের ফাঁদে ২০ কিশোরী

ঢাকা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসিউর রহমান শিশির। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন গেমস কমিউনিটিতে পাবজি ও ফ্রি ফায়ার খেলার নামে ফাঁদ পাততেন শিশির।

সেখানে খুঁজে খুঁজে স্কুল-কলেজে পড়ুয়া কিশোরীদের টার্গেট করতেন তিনি। গেমস কমিউনিটিতে ভিড়িয়ে খেলার নামে প্রেম শুরু করতেন।

শুধু তাই নয়, প্রতারক শিশিরের এ ফাঁদে পড়া কিশোরীদের মোবাইল নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি নিয়ে করতেন আলাপচারিতা। গোপনে তাদের আপত্তিকর মুহূর্তের ভিডিও এবং ছবি তুলে রাখতেন শিশির। পরে সেগুলো ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের কাছে টাকা দাবি করে আসছিলেন শিশির। গত এক বছরে অন্তত ২০ কিশোরী শিশিরের ফাঁদে পড়েছে। এমনকি ভিডিওকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করতেন শিশির।

এক ভুক্তভোগীর বোনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগেরে পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার মোল্লাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক শিশিরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের (দক্ষিণ) বিভাগ।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার মোল্লাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, অনলাইনে বেশ কিছু গেমস খেলার জন্য পাটনার প্রয়োজন হয়। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গ্রেপ্তার শিশির গত কয়েক বছর ধরে উঠতি বয়সী কিশোরীদের নিয়ে গ্রুপে গেমস খেলার জন্য সংগ্রহ করতেন। গেম খেলার সময় তার পার্টনার হয়ে খেলার সুযোগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতো। এরপর কৌশলে মোবাইল নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর, ইনস্টাগ্রাম আইডি ও ফেসবুক আইডিতে সংযুক্ত হয়ে বন্ধুত্ব চলাকালে তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ভিডিও কলে কথা বলতেন। এক সময় এসব মেয়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে নগ্ন ছবি ও পর্ণ ভিডিও পাঠিয়ে অনৈতিক কাজে প্রলুব্ধ করতেন। এরপর সেই সময়ের দৃশ্য স্ক্রিন রেকর্ডারের মাধ্যমে রেকর্ড করতেন। পরে সেই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আরও একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও করতে বাধ্য করতেন। এমন কী এ ভিডিওকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের টাকা অথবা শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করতেন। কেউ অবৈধ সম্পর্কে না জড়াতে চাইলে অথবা দাবিকৃত টাকা না দিতে চাইলে ভুক্তভোগীদের আত্মীয়-স্বজনদের পাঠানো পাশাপাশি অনলাইনে ছেড়ে দিতেন শিশির।  

তিনি বলেন, সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তার বড় বোনকে জানালে তিনি একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুরের জয়দেবপুরে অভিযান চালিয়ে শিশিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
এসজেএ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।