নীলফামারী: ‘স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে পাড়ি জমান ঢাকায়। তিন মেয়ে নিয়ে চোখে সরষে ফুল দেখতে থাকো।
এসব কথা বলেন নীলফামারী সদরের সোনারায় ইউনিয়নের সোনারায় দারোয়ানী গ্রামের সুতাকল এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বন্যা (৪২)।
ফাতেমা আক্তার বন্যা জানান, ২০০৫ সালে অন্যের বাড়িতে কাজ করার জমানো টাকা দিয়ে একটি পুরোনো ভ্যান গাড়ি কিনেন তিনি। কিন্তু ভ্যানে যাত্রী কম হয়। তাই রোজগারও কমে যায়। তাই শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ দোকান (ব্যবসা)। সেই দোকানে রয়েছে মেয়েদের কসমেটিক, ছোট ছেলে মেয়েদের সালোয়ার কামিজ, ছোটদের খেলনাসহ হরেক রকমের মালামাল।
তিনি আরও জানান, গ্রামগঞ্জে ও শহর ঘুরে বিক্রি করেন এসব মালামাল। বেচা কেনাও ভাল হয়। ব্যবসার লাভের টাকা দিয়ে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। নিজে খেয়ে পড়ে চলেন। নিজস্ব ভিটে মাটি নেই তার। অন্যের এক শতাংশ জমির ওপর কোনো রকমে একটি ঝুঁপড়ি ঘর করে বসবাস করেন। তার একমাত্র সম্বল ভ্যান গাড়িটি।
ফাতেমা বলেন, পুরুষরা যদি পারে আমি কেনো পারবো না। এ জন্য সাহস করে রিকশাভ্যান হাতে নিয়ে আজ আমি সংসারের হাল ধরতে পেরেছি। চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েও কোনো সরকারি সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। কারো কাছে ভিক্ষাও করিনি। কারো সহযোগিতাও নেইনি।
সোনারায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন শাহ জানান, ফাতেমা একজন পরিশ্রমী নারী। সংসারের হাল ধরতে ওই পেশা বেছে নিয়েছেন তিনি। আমি তাকে আমার পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করে থাকি। বর্তমানে সে ভালোভাবে সংসার চালিয়ে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। আশা করি, সুবিধাবঞ্চিত অন্য নারীরা তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হবে। কারণ ফাতেমা মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ না করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। সে সমাজের একজন সফল নারী মডেল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩
এসএম