ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে: বিজিবিপ্রধান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪
সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে: বিজিবিপ্রধান

গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া থেকে: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের চলমান সংঘর্ষের কারণে বাংলাদেশে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।

মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, আমরা ধৈর্য ধরে মানবিক দিক থেকে এবং আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে এই পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনাও সেরকমই। তিনি আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা কোনোভাবেই নতুন করে আর রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেব না।

বিজিবি ডিজি বলেন, গতকাল দুপুরে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আগামীকাল বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পর্যন্ত ১১৫ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি সদস্য, সেনা সদস্য আত্মসমর্পণ বা আমাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ সকালে আরও ১১৪ জন যোগ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট ২২৯ জন আশ্রয় নিলেন। পরবর্তীতে দুপুরের মধ্যে আরও ৩৫ জন যোগ হয়ে ২৬৪ জনকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি, তাদের থাকা-খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তাদের মধ্যে ১৫ জন আহত ছিলেন। আর তার আটজন ছিলেন গুরুতর আহত। তাদের মধ্যে চারজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে বিজিবির ব্যবস্থাপনায় ভর্তি করা হয়েছে। বাকি চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিজিবির ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সরকারি পরিকল্পনা সম্পর্কে বিজিবি ডিজি বলেন, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আশ্রিতদের প্রত্যাবর্তন বা ফেরানোর বিষয়ে কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে কাজ চলছে। মিয়ানমার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে। তারাও প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে নোট নিয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই তাদের প্রত্যাবর্তন করানো হবে।

বিজিবি ডিজি বলেন, একইসঙ্গে দুই দেশের দুই সীমান্ত বাহিনীর মতো যোগাযোগ হচ্ছে। সীমান্তবর্তী পরিস্থিতি আপনারা জানেন। মিয়ানমারে গোলাগুলির মধ্যে কিছু শেল এসে বাংলাদেশে পড়ছে। তাতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে গতকাল এক রোহিঙ্গা নাগরিক ও একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এই মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা প্রোটেস্ট নোট দিয়েছি। আমরা বারবার বলেছি এবং আজকেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বড় মিটিং হচ্ছে। আর আমি আগামীকাল সরেজমিনে সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যাব।

তিনি আরও বলেন, আজকে মিয়ানমারের ডিএ (ডিফেন্স অ্যাটাচ) আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। সবদিক এঙ্গেজ করে কীভাবে এর আশু সমাধান করা যায়, সে চেষ্টা আমরা করছি।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আজকে ৬৫ জন রোহিঙ্গা বোটের মাধ্যমে নদী পথে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। আমাদের টেকনাফ বিজিবি তাদের প্রতিহত করেছে। তাদের পুশব্যাক করার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা নতুন করে কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আর প্রবেশ করতে দেব না। এভাবে বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষা করে প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৪
এসজেএ/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।