ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আলাদা হলো মেরুদণ্ডে জোড়া লাগা শিশু নুহা-নাভা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
আলাদা হলো মেরুদণ্ডে জোড়া লাগা শিশু নুহা-নাভা

ঢাকা: পনের ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারে আলাদা করা হয়েছে জন্মগত মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভাকে।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এ দুই শিশুকে দেখতে আসেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ তথ্য জানান।

অস্ত্রোপচারের পর কুড়িগ্রামের বাসিন্দা নুহা-নাভা সুস্থ আছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আমি প্রথম থেকেই এই বাচ্চাদের চিকিৎসার সাথে জড়িত। এর আগেও কয়েকটি অপারেশন হয়েছে, তখন আমি এসেছি। আজকে আমি দেখলাম বাচ্চা দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ও ভালো আছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়, এটা বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবায় একটা যুগান্তকারী কাজ। চিকিৎসা শাস্ত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে আমরা ভুটানের এক রোগীর অপারেশন করেছি। এভাবে যদি বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হয়, তাহলে এ দেশ থেকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার প্রবণতা ক্রমান্বয়ে কমে যাবে।

বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু নুহা ও নাভার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের চিকিৎসার সব খরচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে বহন করছেন। তিনি সার্বক্ষণিক নুহা ও নাভার খবর নিচ্ছেন। চিকিৎসার শেষ ধাপের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নুহা ও নাভা ভালো আছে। তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

২০২২ সালের ২১ মার্চ কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ী এলাকার পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানার স্ত্রী নাসরিন মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো নুহা-নাভার জন্ম দেন। সে বছর এপ্রিলে তাদের চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউর সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে ভর্তি করা হয়।

গতকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত তাদের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ একশোজন মেডিকেল সদস্যের টিম অংশ নেন। ১৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে আলাদা করা হয় নুহা-নাভাকে।

এর আগে ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি নুহা-নাভার প্রথম ধাপের সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অপারেশন চলে। এ অপারেশনে নুহা-নাভার দেহে টিস্যু বর্ধনকারী চারটি এক্সপান্ডা ডিভাইস প্রতিস্থাপন করা হয়। এ অস্ত্রোপচারে ছিলেন বিএসএমএমইউর বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আইয়ুব আলী, নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, শিশু সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম জাহিদ হোসেন, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবাশীষ বনিকসহ আরও ১০ চিকিৎসক। এদিনও ডা. সামন্ত লাল সেন উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
আরকেআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।