ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্মার্ট অফিসার্স ক্লাব বিনির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মেজবাহ উদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
স্মার্ট অফিসার্স ক্লাব বিনির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মেজবাহ উদ্দিন

ঢাকা: সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি কল্যাণমূলক সংগঠন অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা। ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ব্যাপক সুনাম ও সুখ্যাতি কুড়িয়েছে ক্লাবটি।

এ ক্লাবের সদস্যদের অনেকেই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ক্যাডার কর্মকর্তা এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কর্মরত আছেন।  

সবমিলিয়ে ক্লাবের সদস্য সংখ্যা প্রায় সাত হাজারের বেশি, যাদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্তরাও আছেন। নিয়মিত সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সংগঠনটি সর্বদা এগিয়ে। ইতোমধ্যে ঘনিয়ে এসেছে অফিসার্স ক্লাব ঢাকা-এর নির্বাহী কমিটির নির্বাচন। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি হতে যাচ্ছে নির্বাহী কমিটির নির্বাচন। যেখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ২ জন, যুগ্ম সম্পাদক পদে ৬ জন, কোষাধ্যক্ষ পদে ২ জন, সদস্য পদে ৪১ জন সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  

এ নির্বাচন  ঘিরে ক্লাব প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে নির্বাচনী আমেজ ও প্রচারণা। প্রার্থীরা ক্লাবের সদস্যদের কাছে তাদের নিজেদের জন্য ভোট ও দোয়া চাইছেন। নির্বাহী কমিটির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জনমত জরিপ বলছে, মেজবাহ উদ্দিন (সাবেক সচিব যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক) প্রচার প্রচারণা ও জনপ্রিয়তাই অনেকটাই এগিয়ে।  

তথ্য বলছে, তিনি ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়ার সময় ক্লাবের দেনা ছিল চার কোটি টাকা। তার কর্মপরিকল্পনায় ঢাকার ক্লাবটি সম্পূর্ণ দায়-দেনা মুক্ত হয়েছে। এখানে শেষ নয়, ক্লাবের রয়েছে ৭ কোটির টাকার নিজস্ব তহবিল। ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পৌর কর পরিশোধ হয়নি। তবে মেজবাহ উদ্দিনের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় পৌর কর অনেকাংশে হ্রাস করে অফিসার্স ক্লাব ঢাকা পৌরকর পরিশোধ করার ব্যবস্থা নিয়েছে।  

এমনকি নিজস্ব তহবিল থাকায় নির্ভার এগিয়ে চলেছে সংগঠনটির সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। করোনাকালে জনসেবার প্রচেষ্টায় এই মানুষটি নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ক্লাব প্রাঙ্গণে করোনা টেস্টবুথ স্থাপন করেছিলেন, যেখানে কেবল ক্লাবের সদস্য ছাড়াও সাত হাজারের বেশি সরকারি কর্মকর্তা উপকৃত হন। বৈশ্বিক মহামারির কঠিন সময় ৯৬ জন চিকিৎসকের সহযোগিতায় টেলিমেডিসিনের ব্যবস্থা করেছিলেন। এ ছাড়া ছিল করোনার টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা।  

যেখানে ঢাকার অন্যান্য স্বনামধন্য ক্লাবগুলো মহামারির সময়ে জনসেবায় এগিয়ে আসতে পারেনি, সেখানে বর্তমান এই সাধারণ সম্পাদকের একক প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতায় অফিসার্স ক্লাব ঢাকা করোনা মোকাবেলার মতো স্বাস্থ্য সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পেরেছে। তার এই অনন্য ভূমিকার জন্য রোটারি ইন্টারন্যাশনাল মেজবাহ উদ্দিনকে কোভিড নাইনটিন হিরো অ্যাওয়ার্ড দেয়।  

অফিসার্স ক্লাব ঢাকায় ১২তলা ভবনের দুটি দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মিত হচ্ছে। মেজবাহ উদ্দিন দায়িত্বভার নেওয়ার আগে নতুন ক্লাব ভবনের ফ্লোর এরিয়া ছিল সাড়ে তিন লাখ বর্গফুট, যার প্রাক্কলিত মূল্য প্রায় ২২৮ কোটি টাকা। পরে তিনি দায়িত্বভার নেওয়ার পর ফ্লোর এরিয়া বেড়ে দাড়ায় সাড়ে ৫ লাখ বর্গফুট, যার প্রাক্কলিত মূল্য ৪৫০ কোটি টাকা।  

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব থাকাকালীন তিনি তিন কোটি টাকা বরাদ্দে একটি টেনিস মাঠের উন্নয়ন করেন। জেলা পরিষদ ঢাকার সহযোগিতায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্লাব ভবনের চার তলায় নির্মাণ করেন ক্যামেলিয়া গ্রিনহাউজ। গণপূর্ত অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ক্লাব ভবনের নিচ তলায় প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক সদস্যদের র‌্যাম্প নির্মাণ করেন। ভবন নির্মাণের সময় যাতে খেলাধুলায় ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য অস্থায়ী শেড নির্মাণ, সুইমিং পুল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস এবং জিমনেশিয়াম ইত্যাদি ব্যবস্থা সচল রেখেছিলেন।  

মেজবাহ উদ্দিন বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে ক্লাবের আর্থিক অনটন প্রকট আকার ধারণ করেছিল। চেষ্টা করেছি দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর স্পন্সরের সম্পৃক্ততার। ফলে ক্লাব লাভবান হয়েছে। ফিরে এসেছে সচ্ছলতা।  

নানা সেবামূলক কাজে নিজেকে সংযুক্ত রাখায় মেজবাহ উদ্দিনের জনপ্রিয়তাও অনেক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়নে সদা সচেষ্ট থেকেছি। আর্থিক অনিয়ম দূরীকরণে সবার সহযোগিতায় একটি জবাবদিহিমূলক ক্লাব প্রতিষ্ঠায় আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি।  

আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন ভবনের একটি ফ্লোরে স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বসার ব্যবস্থাসহ নামমাত্র মূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ফিজিওথেরাপি সেন্টার স্থাপন করা হবে।

মেজবাহ উদ্দিন জানান, নতুন ভবনে পুরুষ, নারী ও শিশুদের জন্য তিনটি আলাদা সুইমিংপুল, চারটি ব্যাডমিন্টন কোর্ট চারটি টেবিল টেনিস কোর্ট, বিলিয়ার্ড কক্ষ, দুটি ইয়োগা কক্ষ, তাস ও দাবা কক্ষ, ১২শ আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম, আলাদা সেমিনার কক্ষ স্থাপন করবেন।  

তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কর্নার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ক্যাফেটেরিয়া ও লাউঞ্জ, সিনেপ্লেক্স, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য বিউটি পার্লার, উইমেন্স কর্নার, কিডস জোন, গ্রোসারি শপ, মেডিসিন কর্নার ও সেলুন ও লন্ড্রি স্থাপন করবেন। সদস্য ও অতিথিদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ডে ৪৫০টি গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা রাখতে চান। নির্মল চিত্তবিনোদন ও স্মার্ট ক্লাব প্রবর্তনে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।  

বিপুল ভোটে মেজবাহ উদ্দিন পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন বলে সাধারণ সদস্যরা মনে করেন। তিনি ছাড়াও অন্যান্য পদে যেমন কোষাধ্যক্ষ পদে যুগ্ম সচিব মাসুম পাটোয়ারি এবং যুগ্ম সম্পাদক পদে রথিন্দ্রনাথ দত্ত ব্যাপক আলোচনায় রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।