ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খাগড়াছড়ির চার উপজেলায় নেই পশু চিকিৎসক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৪
খাগড়াছড়ির চার উপজেলায় নেই পশু চিকিৎসক

খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি জেলা পশু হাসপাতালে প্রত্যাশিত সেবা মিলছে না। চিকিৎসক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত গুরুত্বপূর্ণ এ সেবা খাতটি।

খামারিদের অভিযোগ, পাওয়া যায় না পর্যাপ্ত ওষুধ। আবার অনেকেই জানেন না কি সেবা মেলে পশু হাসপাতালে।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে খাগড়াছড়ি জেলায় প্রায় দুই হাজার ছোট-বড় খামারে বর্তমানে দুই লাখ ৮৮ হাজার গরু, দুই লাখ আট হাজার ছাগল এবং ২০ লাখের মতো মুরগি পালন করা হচ্ছে। এছাড়া মহিষ, ভেড়া, শূকর রয়েছে আরও ৫৯ হাজার।

আড়াই লাখ টাকা দামের গরু অকাল গর্ভপাতের পর জটিলতায় পরিপূর্ণ চিকিৎসার অভাবে সুস্থ করতে পারেনি। এতে খামারের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন নেহাল ডেইরি ফার্মের তত্ত্বাবধায়ক অনিল ত্রিপুরা। দক্ষ চিকিৎসকের অভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ফার্মের মালিক।

পাঁচ বছর ধরে খামার করে মুরগি পালন করেও খামারি মো. জুয়েল জানেন না ভেটেরিনারি হাসপাতালে মুরগির চিকিৎসা এবং ভেকসিন পাওয়া যায়।

তিনি জানান, বাজার থেকে উচ্চ দামে কিনতে হয় ভ্যাকসিন। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়।  

জেলার মহালছড়ি উপজেলার নতুন পাড়া এলাকার মুরগির খামারি মো. মতিউর রহমান অভিযোগ করেন, ভেটেরিনারি হাসপাতাল থেকে কখনো কোনো সহায়তা পাননি। মুরগির কোনো ধরনের সমস্যা হলে প্রাইভেট চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করান।

খাগড়াছড়ি সদরের গরুর খামারি মো. জমির উদ্দিন জানান, ভেটেরিনারি হাসপাতাল থেকে কখনো কোনো সেবা পাননি তিনি।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মতে চিকিৎসকসহ ৫৫ জন জনবলের বিপরীতে বর্তমানে রয়েছে ২৪ জন। জেলার চার উপজেলায় নেই কোনো চিকিৎসক। নয় ভেটেরিনারি সার্জনের বিপরীতে রয়েছে একজন। তিনিও ছয় মাসের প্রশিক্ষণে রয়েছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার চারটি পদ এখনো ফাঁকা। এছাড়া কম্পাউন্ডার নেই পাঁচ উপজেলায়।  

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সমাপন চাকমা বাংলানিউজকে জানান, উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল থেকে গড়ে ২০ থেকে ৪০ জন খামারি সেবা নেন। এছাড়া উপ-সহকারী কর্মকর্তারা বিভিন্ন ইউনিয়ন ওয়ার্ডে গিয়ে খামারিদের নিয়ে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন সেবা দিচ্ছেন।  

চিকিৎসক সংকটে খামারিদের যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া প্রয়োজন তা দিতে একটু সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান খাগড়াছড়ি জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জওহর লাল চাকমা। তবুও চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীদের নিয়ে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছি। বাৎসরিক আমাদের যে পরিমাণ ওষুধের প্রয়োজন তার চেয়ে অনেক কম ওষুধ পাই। এমন পরিমাণ ওষুধ পাই যা দু-চারটি পশুর চিকিৎসা দেওয়া যায়। প্রত্যাশিতভাবে খামারিদের ওষুধ দিতে না পারলেও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।  

দেশের গুরুত্বপূর্ণ সেবাধর্মী এ প্রতিষ্ঠানের সব সংকট নিরসন করে জনবান্ধন প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করে সেবা পৌঁছে দেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২৪
এডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।