ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এনবিআরে এমটবের বাজেট প্রস্তাবনায় ২১ দফা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৪
এনবিআরে এমটবের বাজেট প্রস্তাবনায় ২১ দফা

ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে এক বাজেটপূর্ব সভায় যোগ দিয়ে ২১ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এমটব) প্রতিনিধিরা। প্রস্তাবনায় টেলিকম সংক্রান্ত আয়কর, মূল্য সংযোজন কর, আমদানি শুল্ক ও সম্পূরক শুল্কের বিষয় রয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমটব মহাসচিব লে কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার। তিনি বলেন, মোবাইল শিল্প খাত এদেশে টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট প্রাপ্তির অন্যতম প্রধান উৎস। এই শিল্পের অবকাঠামোর ওপর দেশের সার্বিক ডিজিটাইজেশন প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল। পাশাপাশি মোবাইল সেবার মাধ্যমেই ব্যাংকিং, মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস, রাইড শেয়ারিং, ই-কমার্স, শিক্ষা, কিংবা ই-কুরিয়ারসহ সকল খাত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এই খাতের সার্বিক প্রবৃদ্ধি অন্যান্য সকল খাতের সার্বিক প্রবৃদ্ধির নির্ণায়ক। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই খাতের উপর প্রযুক্ত বিবিধ কর দেশের অন্যান্য খাতের চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই মাত্রা যথেষ্ট বেশি। এই বিষয়গুলো আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং আমাদের সুপারিসসমূহ তুলে ধরেছি। আমরা আশা করি, আলোচিত বিষয়সমূহকে এনবিআর গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে এবং এর মাধ্যমে দেশে ডিজিটাইজেশনের জন্য সরকারের যে সদিচ্ছা তার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে।

তিনি মোবাইল অপারেটরদের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবনাসমূহ তুলে ধরেন। এ সময় টেলিকম সংক্রান্ত দ্বৈতকর নীতি পরিহারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এ প্রসঙ্গে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ (পিএসআর) দাখিলে ব্যর্থ হলে আয়কর আইন অনুযায়ী ৫০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত কর আরোপের বিধান আছে। এতে করে একই খরচের ওপরে দ্বৈতকর আরোপ করা হয় যা আয়কর আইনের মূলনীতি পরিপন্থী। আমরা এই নীতি পরিহার করার অনুরোধ করেছি।

এমটব মহাসচিব বলেন, যে সকল সরকারি সংস্থাসমূহ যেমন- বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বাংলাদেশ রেলওয়ে, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি চার্জ গ্রহণ করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল হবে না এ ধরনের বিষয় স্পষ্ট করার অনুরোধ করেছি।

বর্তমান করের হার স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত মোবাইল অপারেটরদের ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ ও তালিকাহীন কোম্পানির জন্য ৪৫ শতাংশ। সাধারণ করপোরেট ট্যাক্স হার অতালিকাভূক্ত কোম্পানির জন্য ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং তালিকাভূক্ত কোম্পানির জন্য ২০ শতাংশ। আমরা মোবাইল অপারেটরদের পৃথক শ্রেণীভুক্ত না করে বরং অন্যান্য কোম্পানির সারিতে পুনর্বিন্যস্ত করা এবং তালিকাভূক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কর হ্রাস করার প্রস্তাব করেছি।

এমটব মহাসচিব বলেন, বর্তমানে কোম্পানিসমূহ ব্যবসায় লোকসান করলেও ন্যূনতম কর পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছে। যদিও কর বিধি অনুযায়ী ব্যবসার আয় পূর্ববর্তী বর্ষসমূহে সংঘটিত লোকসানের সঙ্গে নিস্পন্নকরণ অনুমোদিত, তবুও কোম্পানিকে ন্যূনতম কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। আমরা সরকারের রাজস্ব এবং মূল্যায়নকারীর অধিকার উভয় বিষয় নিশ্চিত করার জন্য ন্যূনতম কর সমন্বয়ের সুযোগ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রেখেছি।

সিম সরবরাহের উপর হতে মূল্য সংযোজন কর অপসারণ করা হলে গ্রামাঞ্চলে মোবাইল সম্প্রসারণে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, কার্যত যা সরকারের সমগ্র বাংলাদেশ ডিজিটালাইজেশন এর আওতায় আনার লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এবং মোবাইল টেলিযোগাযোগ শিল্পখাতের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। আমরা ই-সিমসহ সকল সিম সরবরাহের উপর মুসক অপসারণের প্রস্তাব করেছি।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহ মূসক নিয়ন্ত্রণ আনুপাতিকভাবে অনুসরণ করছে না। যার ফলে অপারেটরদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা প্রয়োজন। সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থাসমূহের উপর মূসক অপসারণ করার প্রস্তাব রেখেছি।

টেলিকম অপারেটরদের জন্য পৃথক এইচএস কোডিং সিস্টেম না থাকায় অপারেটরদের এন্টেনা ডিজাইনিং ও কাস্টমাইজেশন সলিউশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে পৃথক এইচ এস কোডের সুপারিশ করেছি বলেও জানান এমটব মহাসচিব লে কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৪
এমআইএইচ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।