ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘পরিকল্পিতভাবে বিট কর্মকর্তাকে ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৪
‘পরিকল্পিতভাবে বিট কর্মকর্তাকে  ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়’ মো. সাজ্জাদুজ্জামান সজল

কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় কেটে মাটি পাচারের সময় পরিকল্পিতভাবে ট্রাক চাপা দিয়ে বিট কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের উখিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ রাসেল।

তিনি জানান, অব্যাহতভাবে অভিযানের কারণে ‘সংক্ষুদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ডাম্পার ট্রাকের চাপায় বনবিট কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে।



মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় উখিয়া থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

এ সময় তিনি ঘটনায় দায়ের মামলার প্রধান আসামি মো. বাপ্পীকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মাটি পাচারকারি চক্রের সদস্যদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে এবং তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

গ্রেপ্তার মো. বাপ্পী (২৩) উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মো. কাশেমের ছেলে। তিনি ঘাতক ট্রাকটির চালক।  

এর আগে ১ এপ্রিল ভোরে উখিয়ার হরিণমারা এলাকা থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিমকে (৩৫)।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, গত মাসখানেকের বেশি সময় ধরে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হারে পাহাড় কেটে মাটির পাচার করে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্র। আর পাহাড় কেটে মাটি বিক্রিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন বনবিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান সজল। ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে অভিযান চালিয়ে তিনি মাটি পাচারকারি চক্রের পাঁচটি ডাম্পার ট্রাক জব্দ এবং কয়েকটি মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে চক্রটির লোকজন তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।

‘গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, বনবিভাগের অভিযানে ট্রাক জব্দ এবং মামলা দায়ের করায় এজাহারভুক্ত ১০ নম্বর আসামি কামাল উদ্দিন ড্রাইভারসহ মাটি পাচারকারিরা বনবিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। তারা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এবং নানাভাবে তাকে (সাজ্জাদুজ্জামান ) হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। এমন কি তারা সাজ্জাদুজ্জামানকে প্রাণে মারারও হুমকি দেয়। ’

ঘটনার সময় ট্রাকচালক বাপ্পীর পাশের সিটে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার বসা ছিল এবং তার ইন্ধনে বন কর্মকর্তাদের বহনকারি মোটরসাইকেলটি চাপা দেওয়া হয়েছিল সাংবাদিকদের তথ্য দেন মোহাম্মদ রাসেল।
সহকারী পুলিশ সুপার রাসেল জানান, ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম শহরের বন্দর থানা এলাকায় মামলার প্রধান আসামি ও ঘাতক ট্রাকটির চালক বাপ্পী আত্মগোপন অবস্থায় রয়েছে খবরে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এতে সন্দেহজনক স্থাপনাটি ঘিরে ফেললে তিনি দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

৩১ মার্চ মধ্যরাতে উখিয়ায় সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে অভিযানে গিয়ে ‘মাটি পাচারকারিদের ড্রাম্প ট্রাকের চাপায়’ বনবিট কর্মকর্তা এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে মো. সাজ্জাদুজ্জামান (৩০) নিহত হন।  তিনি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। এ সময় আহত হন বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী (২৭)। তিনি টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মজ্ঞুরের ছেলে। এ ঘটনায় পরের দিন ১০ জনের নামোল্লেখ করে ১৫ জনের নামে উখিয়া রেজ্ঞ কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৪
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।