ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সরকারের সদিচ্ছার অভাবে রানা প্লাজার বিচারে ধীরগতি: গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
সরকারের সদিচ্ছার অভাবে রানা প্লাজার বিচারে ধীরগতি: গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি

ঢাকা: ‘হাজারো প্রাণ ও স্বপ্ন হত্যার বিচার চাই এবং মৃতদের স্মরণ করো জীবিতদের জন্য লড়াই করো’ আহ্বানে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছরে প্রতিবাদী র‍্যালি ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাভারে রানা প্লাজার সামনে সকাল ৯টায় নিহত স্মরণে শ্রদ্ধা অর্পণ শেষে সকাল ১১টায় উদ্ধারকর্মী হিমালয় হিমুর আত্মাহুতির ৬ বছরে বিরুলিয়ার গোলাপগ্রামে হিমুর মৃত্যুর স্থানে শ্রদ্ধা অর্পণ করা হয়।

প্রতিবাদী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, বিআইজিডির গবেষক মাহীন সুলতান। আরও বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, সহ-সভাপ্রধান অঞ্জন দাস, নিহত শ্রমিক আঁখি আক্তারের মা নাসিমা আক্তার, আহত জেসমিন, নিহত শাওনের বাবা আজিজ মিয়া, নিহত ফজলে রাব্বীর মা রাহেলা আক্তার, নিহত শাহীদার মা তাহেরা এবং আরও অনেকে।

বক্তারা বলেন, সারা দুনিয়ার কারখানার ইতিহাসে অন্যতম ঘটনা রানা প্লাজা ভবন ধসে হাজারো প্রাণ ও স্বপ্ন নাই হবার ঘটনা। ১১ বছরেও যথেষ্ট সাক্ষী না পাওয়ার খোঁড়া যুক্তিকে সামনে এনে বিচার প্রক্রিয়া ধীর করে রাখা হয়েছে। অথচ দোষীদের শনাক্ত করার মতো প্রমাণ ২৪ এপ্রিলের মধ্যেই নিহিত আছে।

বক্তারা আরেও বলেন, শুধু ভবন মালিক সোহেল রানা নয়, বিভিন্ন কারখানার মালিক, ত্রুটিপূর্ণ ভবন অনুমোদনের জন্য সরকারি কর্মকর্তারাসহ আরেও অনেকে এ ঘটনার জন্য দায়ী। অথচ সোহেল রানা ছাড়া বাকি সবাই জামিনে মুক্ত এবং আইনের ফাঁকফোকর গলে জেলের বাইরে। আইনের আশ্রয় নিয়ে মামলার গতি ধীর করার জন্য সর্বোচ্চ তৎপর তারা। আইনের শাসন সবার জন্য নিশ্চিত হবার যে ব্যবস্থা থাকা দরকার তা প্রশ্নের সম্মুখীন আজ। সরকারের সদিচ্ছার অভাব এবং মালিকদের প্রভাবের কারণে এই দীর্ঘসূত্রিতা চলছে বলে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন।

তারা বলেন, বিচারিক আদালতের রায় অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারি থেকে ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির আদেশ আছে আপিল বিভাগের। এই সময়ের মধ্যে যাতে মামলা শেষ হয় এবং রানা প্লাজার ঘটনায় ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পায় তার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু এই দোষীদের নানা কায়দায় রক্ষা করাই যেন এখন দীর্ঘসূত্রিতার প্রধান কারণ বলে রানা প্লাজায় নিহত স্বজনসহ জনগনের উদ্বেগ।

বক্তারা আরও বলেন, রানা প্লাজার ঘটনাকে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। ইতিহাসে বাঁচিয়ে রাখতে এবং তরুণদের লড়াইয়ে প্রেরণা হিসাবে এই শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। আর সে কারণে রানা প্লাজার সামনের স্থানটিতে স্থায়ী বেদী নির্মাণ এবং স্থানটি রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।

তারা বলেন, গত ১১ বছর ধরে রানা প্লাজার এই ঐতিহাসিক জায়গাটি নানাভাবে আবর্জনার স্তূপে, কখনো দখল করে দোকানপাট বসানো হয়েছে, যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। রানা প্লাজা স্থানটি আবর্জনার স্তূপে পরিণত না করে এটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, একদিকে একজীবনের সমপরিমাণ সম্মানজনক-মর্যাদাপূর্ণ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না করে দফায় দফায় কিস্তিতে শ্রমিকদের অর্থ সহযোগিতার ও নানা প্রশিক্ষণের নামে শ্রমিকরা যাতে বিচারের দাবিতে সংগঠিত না হয়ে ভিক্ষুকের মতো দুয়ারে দুয়ারে কেবল সহায়তা খোঁজে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ কোনো ভিক্ষা নয়, এটি শ্রমিক ও নাগরিকের আইনি অধিকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।