ঢাকা, সোমবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ জুন ২০২৪, ১৬ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জে হিটস্ট্রোকে ২টি গরুর মৃত্যু, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩১ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৪
চাঁপাইনবাবগঞ্জে হিটস্ট্রোকে ২টি গরুর মৃত্যু, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: টানা তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমে মানুষ ও প্রাণীকুলের জীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলমান তাপপ্রবাহ ও লোডশেডিং এ গত সপ্তাহে তাসেম আলীর খামারে দুটি গরু হিটস্ট্রোকে মারা গেছে।

অসুস্থ হয়ে পড়েছে আরও দুটি গরু।

স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের প্রতি পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রায় কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও তাপপ্রবাহের সময় খামারিদের করণীয় কি এবং অসুস্থ হলে চিকিৎসা দিতে পারলাম না।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের গোবড়াতোলা এলাকার মো. তাসেম আলি জানান, গত রমজানের ঈদের আগে তার খামারের দুটি গরু চুরি হওয়ার পর আসন্ন ঈদের আগে তাপপ্রবাহে আরও দুটি গরু মারা যাওয়ায় এখন তিনি উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রী যেখানে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ বা প্রণোদনা দিয়ে সহায়তা করছে সেখানে তার মত খামারিরা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে কোনো সহযোগিতা, ভ্যাকসিন বা তীব্র তাপপ্রবাহে খামারিদের করণীয় নিয়ে কোন উপদেশ পান না।  

অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার কালোপুর গ্রামের খামারি মো. আশরাফুল আলম রশিদ ক্ষোভের সঙ্গে জানান, যেখানে প্রাণীসম্পদ কার্যালয়ে একটি ভ্যাকসিনের দাম প্রায় ৪০০ টাকা সেখানে বাজারে তার দাম সাড়ে ৭০০ টাকা। সরকারি প্রতিষ্ঠান থাকার পরও সহযোগিতা না পাওয়ায় হতাশ তিনি। পাশাপাশি প্রতিদিন গড়ে ৫ ঘণ্টা লোডশেডিং। গরমে তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে ফ্যান চালানো জরুরি হলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। তার দাবি সব মিলিয়ে অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন প্রতিদিন তার খামারে পাঁচ হাজার টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় বেড়ে যাচ্ছে পশু পরিচর্যা খরচ।

এ অবস্থা শুধু তাসেম আলী বা আশরাফুল আলমের নয়, তাদের মতো এই জেলার নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত এবং ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১৮ হাজার খামারির একই অবস্থা।

শিবগঞ্জের অপর খামারি রহমান আলী জানান, গরুর খাদ্য, ওষুধ ও শ্রমিকের মূল্য বেড়ে যাবার পাশাপাশি দেশজুড়ে চলা লোডশেডিং এ পরিচর্যা খরচ বেড়ে যাওয়ায় কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা গরুর দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন তিনি। পাশাপাশি তাপদাহের কারণে দুধের উৎপাদন কমে গেছে আশংকাজনক হারেও। তাই ভারত থেকে কোনোভাবেই যেন গরু না আসে এমন দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, গরুগুলোকে মোটাজাত করতে খামারিরা যাতে কোনো ধরনের স্টেরয়েড ব্যবহার করতে না পরে সে জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদের পক্ষ থেকে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম ও প্রাণিসম্পদের সব কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে নিয়মিত তদারকিও করা হচ্ছে। সারাদেশের ন্যায় এ জেলাতেও প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বইছে। এই গরম থেকে গবাদিপশু বাঁচাতে ঘর শীতল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। টিনের চালে পানি ছিটাতে হবে। ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে। গরুকে দিনে তিনবার গোসল করাতে হবে বা গায়ে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।  

খামারিদের পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন সরবরাহ দিতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, সরবরাহের তুলতায় চাহিদা বেশি হওয়ায় এ সংকট। তবে খামারিদের সহযোগিতা বা উপদেশ না দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, মে ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।