ঢাকা: চাকরির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বাংলাদেশি জনশক্তিকে ভিসা দেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।
বৃহস্পতিবার (জুন ১৩) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলি আবদুল্লাহ খাসাইফ আল হামুদি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা যে সকল মানুষ নেবে, তারা নিশ্চিত করে নেবে যে তাদের জন্য চাকরি অপেক্ষা করছে। এমনভাবে নেবে না যে, লোক নিয়েছে কিন্তু কাজ নেই বা চাকরি নেই।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত উভয়ই জোর দিয়েছেন যাতে অবৈধ ইমিগ্রেশন না হয়। উভয় পক্ষই এ ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন।
প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার মানুষ সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছে জানিয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূত জানান, প্রতিদিন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রায় ১ হাজার ভিসা ইস্যু করছে; যার মধ্যে সরাসরি ৫০০ ভিসা এবং এজেন্টের মাধ্যমে ৫০০ ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে।
শিগগিরই সংযুক্ত আরব আমিরাতের কয়েকজন মন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন জানিয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলি আল হামুদি বলেন, তারা (মন্ত্রীরা) বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর ও বিস্তৃত করতে নতুন নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধান করবেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ইতোমধ্যে দুই দেশের মধ্যে খুবই বিস্তৃত এবং গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু আমরা এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চাই, নতুন উচ্চতায় নিতে চাই।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার দেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
আবদুল্লাহ আলি আল হামুদি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ বিন রাশিদ আল মাকতুম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
বিনিয়োগ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ নিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত বলেন, আগামী দিনগুলোতে তার দেশের যেসব মন্ত্রীরা বাংলাদেশ সফরে আসবেন, তারা এ বিষয়ে আলোচনা করবেন।
কনটেইনার টার্মিনালসহ বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করতে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান আবদুল্লাহ আলি আবদুল্লাহ খাসাইফ আল হামুদি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সব সেক্টরে সব কিছু বাস্তবায়নের গতি ত্বরান্বিত করছে। গতি ত্বরান্বিত করতে আমরা সব কিছু করছি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশের একটি কোম্পানি বাংলাদেশের সিভিল অ্যাভিয়েশনকে ‘অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম (এপিআইএস)’ সরবরাহের জন্য অপেক্ষা করছে।
সিভিল অ্যাভিয়েশনকে ‘অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম (এপিআইএস)’ বিষয়টি দর কষাকষির চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, বিষয়টি এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে দায়িত্ব দেন।
‘অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন সিস্টেম’ হলো একটি ইলেকট্রনিক ডাটা ইন্টারচেঞ্জ সিস্টেম। নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ এবং অন্যান্য দেশগুলো সেসব দেশ ভ্রমণের আগে এয়ারলাইন্সের কাছে যাত্রীদের তথ্য চায়। এটিই অ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন (এপিআই) নামে পরিচিত।
বাণিজ্যিক এয়ারলাইনগুলো যাত্রীদের পাসপোর্ট এবং ফ্লাইটের তথ্য থেকে স্বল্প পরিসরে শনাক্তকরণ তথ্য কম্পিউটার পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠিয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২৪
এমইউএম/এমজেএফ