ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নেত্রকোনায় গভীর রাতে ভিজিএফের ৮০ বস্তা চাল জব্দ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৪
নেত্রকোনায় গভীর রাতে ভিজিএফের ৮০ বস্তা চাল জব্দ

নেত্রকোনা: জেলার বারহাট্টায় গভীর রাতে ৮০ বস্তা চাল জব্দ করেছে এলাকাবাসী। এসময় সেলু ইঞ্জিনচালিত ট্রলির (হ্যান্ডট্রলির) চালক বাপ্পী মিয়াকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরে বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে বারহাট্টা উপজেলার বাউসী এলাকায় হ্যান্ডট্রলি ভর্তি ৮০ বস্তা চাউল জব্দ করে এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে চাল ভর্তি হ্যান্ডট্রলিসহ চালককে আটক করে।  

আটক বাপ্পী (২৭) জেলা সদরের বাইশদার গ্রামের বাসিন্দা।

এলাকাবাসীর দাবি- চাউলগুলো ভিজিএফের। বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে ঈদ উপলক্ষ্যে দুস্থদের বিতরণের জন্য দেওয়া হয়েছিল এসব চাউল। কিন্তু চেয়ারম্যান এসব চাউল দুস্থদের না দিয়ে রাতের আঁধারে বিক্রি করে দিচ্ছিলেন।

তবে রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু জানান, আমার ইউনিয়নে আসা বরাদ্দকৃত চাল ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে সঠিকভাবে বণ্টন করেছি। জব্দকৃত চল কার এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী এলাকায় হ্যান্ডট্রলি ভর্তি ৮০ বস্তা চাউল আটক করে এলাকাবাসী। এসময় বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত সুলতান আহমেদ নূরীর ছেলে সৈকত আহমেদ নূরীর নেতৃত্বে এলাকার লোকজন এসব চাউল জব্দ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে চালসহ হ্যান্ডট্রলিসহ চালককে থানায় নিয়ে যায়।  

এ ঘটনায় সৈকত আহমেদ নূরী রায়পুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে রাতেই চাউল তিনি আটকের ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ শেয়ার করেছেন।

এদিকে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক রায়পুর ইউনিয়নে ভিজিএফ চাউলের কতজন উপকারভোগী তাদের সঠিক নাম, ঠিকানা তদন্তের দাবি প্রশাসনের কাছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।  

সৈকত আহমেদ নূরী জানান, আটক করার সময় হ্যান্ডট্রলি চালককে আমরা জিজ্ঞেস করে জেনেছি- চাউলগুলো  ভিজিএফের। ঈদ উপলক্ষ্যে বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দুস্থদের বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত চাউল এগুলো। কিন্তু চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু ভাই চাউলগুলো দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ না করে রাতের আঁধারে অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছিলেন। চাউলগুলো রায়পুর থেকে ঠাকুরাকোণার দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রাজু জানান, চাউলগুলো আটকের ঘটনা শুনেছি। কিন্তু এগুলো কার আমি কিছুই জানি না। আমার ইউনিয়নে আসা বরাদ্দকৃত চাল আমি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সঠিকভাবে বণ্টন করেছি।

বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গতরাতে চাউলগুলো ভর্তি একটি হ্যান্ডট্রলি আটক করে এলাকাবাসী। এতে ৮০ বস্তা চাল রয়েছে। চাউলগুলো নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে চাউলগুলো ভর্তি হ্যান্ডট্রলিসহ চালককে থানায় নিয়ে এসেছি। এগুলো কীসের চাল জানা যায়নি।

তবে ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি জানান, চাউলগুলো সাদা বস্তায় ছিল। কোনো সরকারি বস্তায় না থাকায় সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না চাউলগুলো আসলে কীসের। তবে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।