ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জামালপুরে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি ভাইরাস, আতঙ্কিত খামারিরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
জামালপুরে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি ভাইরাস, আতঙ্কিত খামারিরা

জামালপুর: জামালপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে গরুর শরীরে দেখা দিয়েছে স্কিন ডিজিজ লাম্পি ভাইরাস। এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে প্রান্তিক এলাকার ছোটো ছোটো খামারে।

গত এক মাসে এই রোগে গরুর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এ অবস্থায় আতঙ্কে রয়েছেন খামারিরা।  

তবে এতে আতঙ্কের কিছু নেই বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, গরুর বাড়তি পরিচর্যাসহ চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেই সেরে যাবে এই ভাইরাস।  

জেলার সাতটি উপজেলাতেই লাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। এ ভাইরাস দ্রুত জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। লাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গরুর বেঁচে যাওয়ার সম্ভবনা খুবই কম থাকে। তবে এ ভাইরাসে ছোট গরুই বেশি আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত গরুর প্রথমেই ১০৬ থেকে ১০৭ ডিগ্রি জ্বর হয় এবং চামড়ার নিচে ফুলে গুটি হয়। পরে সেই গুটি পেকে বা গলে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষত আস্তে আস্তে বড় হয়। এই ক্ষত থেকেই গরু মারা যায়।  

সরেজমিনে সদর ও ইসলামপুর উপজেলার কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গরুর শরীরে চামড়ার নিচে ছোট ছোট ফোলা গুটি। শরীরে হাত দিয়ে দেখা যায় তাপমাত্রাও অনেক। রোদে ও গরমে গরু হাঁসফাঁস করছে। আক্রান্ত গরু খাবার খাচ্ছে খুব কম।  

সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের কালিবাড়ি এলাকার জীবন নাহার বলেন, লাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত বছর তার শখের গরুটি মারা গেছে। এবারও সেই রোগেই আক্রান্ত হয়েছে আর একটি গরু। এখন আমি সেই গরুর চিন্তায় দিশেহারা ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এই গরু মারা গেলে আমি নিঃস্ব হয়ে যাবো।

ওই এলাকার আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, গ্রাম অঞ্চলের কৃষক বা গৃহস্থ সবার ঘরে কম-বেশি গরু থাকে। আর এসব গরুর লালন পালন নারীরাই করে থাকেন। ওইসব প্রান্তিক নারীরা একটি বা দুইটি গরু পালন করে পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার চেষ্টা করেন। এ অবস্থার মধ্যে হঠাৎ করে গরুর লাম্পি ভাইরাস রোগ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিনিয়ত ছোট ছোট বাছুর এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ভাইরাসজনিত এই রোগের এমন সংক্রমণে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ছোট-বড় প্রান্তিক খামারিরা।

ইসলামপুর উপজেলার হাসমত আলী বলেন, আমার একটা গরু লাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখন একটু ভালো হলেও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। তবে খুব কষ্ট করে অনেক যত্ন নিতে হচ্ছে। পশু হাসপাতালের কেউ এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে আসেনি। বাইরের চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, মানুষকে সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছি। এ ভাইরাসে গরু আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসকের পরামর্শে গরুর বাড়তি পরিচর্যা করলেই লাম্পি ভাইরাস সেরে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।