বগুড়া: বগুড়ার সদর উপজেলায় ধাওয়া খেয়ে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া রতন জিলাদার ওরফে কাবিলা (৩২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২ আগস্ট) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার এরুলিয়া খন্দকার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রতন একই উপজেলার এরুলিয়া জিলাদার পাড়ার মৃত শাবদুল জিলাদারের ছেলে। তিনি পেশায় মাংসের দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
জানা গেছে, স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা জেনে গত ৩১ জুলাই আরিফুল ও আমিন নামে দুই যুবককে মারপিট করেন রতন। এর জের ধরেই রতনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে নিহতের মা শিরানা বেওয়া ও বোন সফুরা বেগমের দাবি।
নিহতের মা ও বোন জানান, একই এলাকার আরিফুল ও আমিন দুই বন্ধু এবং ভগ্নিপতি। কাবিলা ছয় বছর আগে বিয়ে করেন। তিন বছর আগে থেকে রতনের স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করেছিলেন আরিফুল। কিছুদিন আগে রতনের স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন আরিফুল। এরপর ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ধর্ষণ করছিলেন তিনি।
রতনের স্ত্রী বলেন, গত ৩০ জুলাই রাত ৮টার দিকে একটি ১০০ টাকার নোট জানালা দিয়ে তার ঘরে পড়ে। তিনি টাকা হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে দেখে আরিফুল ও আমিন দাঁড়িয়ে আছেন। তারা ঘরে প্রবেশ করতে চান। এমন সময় রতন বাড়িতে এলে আরিফুল ও আমিন পালিয়ে যান। পরে রাতে রতনকে তার স্ত্রী আগের ঘটনাসহ বিস্তারিত জানান। পরদিন ৩১ জুলাই দুপুরে আরিফুল ও আমিন গ্রামের রাস্তায় বসে ছিলেন। সেসময় রতন পেছন থেকে গিয়ে লাঠি দিয়ে দুজনকেই মারধর করেন। আরিফুল বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে বিকেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ধর্ষণের বিষয়ে রতনকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) আদালতে গিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন রতন। ধর্ষণ মামলা দায়ের করার জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যেতে বলেন তার আইনজীবী।
নিহতের স্ত্রী বলেন, আরিফুল ও আমিন বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরের পর থেকে রতনকে হুমকি দিচ্ছিলেন। শুক্রবার ভোরে রতন গোদারপাড়া বাজারে মাংসের দোকানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এর পরই তারা রতনকে ধাওয়া করে মসজিদের ভেতর কুপিয়ে হত্যা করেন।
এরুলিয়া বড় জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মোহাম্মদ আসলাম হোসেন বলেন, আমি ফজরের আজান দিয়ে মসজিদের দরজা খুলে দিয়ে ওয়াশ রুমে যাই। এরমধ্যেই মসজিদের বারান্দায় শব্দ শুনতে পাই। ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনে পড়ে থাকতে দেখে মসজিদের মাইকে ঘটনাটি গ্রামবাসীকে জানাই। পরে গ্রামের লোকজন এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম বলেন, নিহত রতনের স্ত্রীকে ধর্ষণের জের ধরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে আরিফুল, আমিন ছাড়াও আরও একজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে। নিহত রতনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২৪
এসআরএস