মাদারীপুর: ছেলের স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবে। তাই রিকশাচালক বাবা অনেক কষ্ট করে ছেলেকে শরীয়তপুর পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি করান।
মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পাঁচখোলা গ্রামের রিকশাচালক মিরাজ তালুকদার ও পারভীন বেগমের ছেলে রাব্বি (২১)। দুই বোন ও ভাই একাই ছিলেন রাব্বি। তিনি সবার ছোট। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটিতে চলছে শোকের মাতম।
জানা গেছে, ১৯ জুলাই শাহাবাগে পুলিশের গুলিতে নিহত হন রাব্বি। ছেলেকে হন্য হয়ে খুঁজতে থাকেন তার পরিবার। অবশেষে গত ৪ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল মর্গে খোঁজে পান রাব্বির মরদেহ। পরে ৫ আগস্ট নিজ গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে রাব্বি শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেন। ১৯ জুলাই ঢাকার শাহবাগ এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাব্বি। গুলি তার কপাল দিয়ে ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজে রাখা হয়েছিল। আন্দোলনে যোগদান করা ছেলেকে না পেয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে খোঁজে বেড়াচ্ছিলেন পরিবারটি। অবশেষে গত ৪ আগস্ট রাতে শুনতে পান রাব্বির মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, রাব্বি অনেক মেধাবী ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে পরিবারের হাল ধরবেন। কিন্তু সেই হাল আর ধরা হলো না। আমরা চাই যে পুলিশ তাকে এভাবে গুলি করে হত্যা করেছে তাদের বিচার এবং সরকারের কাছে গরিব অসহায় এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানো জোর দাবি জানাচ্ছি।
নিহত রাব্বির বাবা মিরাজ তালুকদার বলেন, ১৯ জুলাই ছেলে আন্দোলনে যায়। এরপর তাকে আর খুঁজে পাইনি। বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকি তাকে। পরে ৪ আগস্ট জানতে পারি তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মরদেহ নিয়ে বিচারের দাবিতে মিছিলও করে। ‘কি অপরাধ ছিল আমার ছেলের? কেন তাকে হত্যা করা হলো? আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১১১৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৪
এসএম