ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মৌলভীবাজার শহর রক্ষা বাঁধে জটিলতা ভূমি অধিগ্রহণ       

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪
মৌলভীবাজার শহর রক্ষা বাঁধে জটিলতা ভূমি অধিগ্রহণ       

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারে শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদটির নাম মনু। এই শহর রক্ষার জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ এবং অর্ধ বরাদ্দ করা হলেও এখনো সেই কাজটি শেষ হয়নি।

ফলে প্রতিবছর মারাত্মক ঝুঁকির মুখে থাকতে হয় মৌলভীবাজারবাসীদের।  

মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের প্রধান জটিলতা ভূমি অধিগ্রহণ। এর ফলে সুসম্পন্ন হচ্ছে না শহর প্রতিরক্ষার এই কর্মযজ্ঞ। জেলার এ নদে সঠিকভাবে কাজ না হওয়া প্রতিবছরই পড়তে হয় বন্যার কবলে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন জেলাবাসী।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জেলাবাসীকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে জেলার প্রধান মনু নদ ২০২১ সালে ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে মেগা প্রকল্প নেওয়া হলেও এ প্রকল্পও অদ্যাবধি আলোর মুখ দেখেনি। ২০২৩ সালের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। দ্বিতীয় ধাপে ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এদিকে তবে এ পর্যন্ত মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৪৭ শতাংশ।

অপর সূত্রে জানা যায়, জেলার চারটি নদীতে বিগত ৫ বছরে বিভিন্ন জায়গায় ইমার্জেন্সি বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে মনু নদে ১১ কোটি ৮৮ লাখ ৩২ হাজার, ধলাই নদীতে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭৮ হাজার ও জুড়ি নদীতে ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। নদীভাঙন রোধে অস্থায়ী কাজে মৌলভীবাজারের চারটি নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৫ বছরে ৬৪ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন করলেও সেগুলো বন্যা প্রতিরোধে জেলাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না।

অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ নামধারী ঠিকাদার ও স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এসব নদীতে বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেনতেন কাজ করে বিল তুলে নেন। এতে লাভবান হয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, মৌলভীবাজার শহরকে রক্ষার জন্য মনু নদের দুই দিকে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের প্রধান জটিলতা ভূমি অধিগ্রহণ। নানান জটিলতার কারণে আমরা এখনো জমি অধিগ্রহণ করতে পারছি না। সে মোতাবেক পুরো কাজটি ৪৭ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এই কাজে মোট বরাদ্দ ৯৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা।  
 
তিনি আরও বলেন, আমি মৌলভীবাজারবাসীর স্বার্থে ব্যক্তি উদ্যোগে জমি অধিগ্রহণ বিষয়ে দু-একটি উদ্যোগে নিয়েছিলাম কিন্তু  পরে দেখি আমার বিরুদ্ধে নানান হয়রানিসহ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ কেউ আবার মামলাও উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ফলে এ কার্যক্রমে দারুণভাবে নিরুৎসাহিত হয়েছি। সুপরিকল্পিতভাবে এবং সম্মিলিত শক্তি নিয়ে অগ্রসর না হলে এই কাজটি করা খুবই কঠিন বলে মনে করি।

মৌলভীবাজার জেলার চারটি নদীতে ইমার্জেন্সি বরাদ্দের বিষয়ে জাবেদ ইকবাল বলেন, এগুলো আমি এখানে যোগদান করার আগের কার্যক্রম। এ বিষয়ে আমার জানা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৪
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।