ঢাকা, শনিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘দলীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে নির্বাচন প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত করতে হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
‘দলীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে নির্বাচন প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত করতে হবে’

ঢাকা: জাতীয় থেকে স্থানীয় সরকার—সব পর্যায়ে নির্বাচন ব্যবস্থাকে যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে এবং দলীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) উপদেষ্টা সিরডাপ মিলনায়তনে দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের আয়োজনে ‘গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জনআকাঙ্ক্ষার আলোকে স্থানীয় সরকার সংস্কার’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন।

হাসান আরিফ বলেন, সংলাপ একটি চলমান প্রক্রিয়া, জনআকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করার একটি প্ল্যাটফরম। এখানে বহুমত থাকবে। এ ধরনের আলোচনাকে ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে দিতে হবে। উপমহাদেশে একশ বছরের বেশি সময় ধরে স্থানীয় সরকারের কাঠামো চালু থাকলেও এখনও আমরা একে শক্তিশালী করে তুলতে পারি নাই। আইনে অনেক কিছু থাকলেও আমরা সেসব কার্যকর করতে পারি নাই।

তিনি বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা দৃঢ় হতে হবে। স্থানীয় সরকারের সংস্কারের দাবিগুলো উত্থাপন করা দরকার নির্বাচিত সরকারের কাছে। অন্তর্বর্তী সরকার একটি সংস্কার করলে পরবর্তীতে তারা তা অব্যাহত রাখবেন কি-না সে নিশ্চয়তা নেই। তাই যারা জনপ্রতিনিধি হবেন, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে যেসব রাজনৈতিক দল, তাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করতে হবে। জাতীয় থেকে স্থানীয় সরকার—সকল পর্যায়ে নির্বাচন ব্যবস্থাকে যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে। দলীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত করতে হবে।

হাসান আরিফ আরও বলেন, বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ কর্তৃত্ব, জনবল, আর্থিক সামর্থ্য ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে স্থানীয় জনগণকে প্রয়োজনীয় সেবাদানের ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হয়। বিশেষত ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষেত্রে এ সমস্যাগুলো অত্যন্ত প্রকট। সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ইউএনও—এ ত্রিমুখী টানাপোড়েনে উপজেলা পরিষদের যথাযথ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারছে না। আইনে উল্লেখ থাকলেও হস্তান্তরিত কার্যক্রমগুলো এখনও উপজেলা পরিষদের কাছে যথাযথভাবে ন্যস্ত করা হয়নি। জেলা পরিষদের কাজ কী, জেলার মানুষের কোনো উপকারে তারা পাশে থাকেন—এ সম্পর্কে কারোরই কোনো স্বচ্ছ ধারণা নেই। আইনগত বাধ্যবাধকতা না থাকলেও পৌরসভা এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেও সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যের ‘পরামর্শ’ উপেক্ষা করা যায় না। সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে আমাদের ‘নগর সরকার’ গঠনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, আমরা সংস্কার চাই নাকি কাঠামোগত বিপ্লব চাই, সেটা সুস্পষ্ট করতে হবে। সামনের দিকে এগোতে হলে সরকারি ও বেসরকারি—উভয় পক্ষকে একসাথে কাজ করে যেতে হবে। সংস্কারে নাগরিক সমাজ যেমন একটি অংশ, আমলাতন্ত্রকেও এর অংশীজন হিসেবে বিবেচনায় নিতে হবে, তৃণমূল জনগণের কাছ থেকে প্রস্তাব গ্রহণ করতে হবে। প্রস্তাব হতে হবে পূর্ণাঙ্গ, যা সমঝোতার মাধ্যমে সংস্কার করতে হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ অবশ্যই স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর করতে ভূমিকা রাখবে। সকল সংস্কারের লক্ষ্য হতে হবে সুশাসন কায়েম করা ও জনসেবা নিশ্চিত করা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন গভর্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম এবং এশিয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ কাজী ফয়সাল বিন সেরাজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও লীড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী আব্দুল্লাহ আল নোমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।