গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সদর উপজেলায় দাফনের ২৫ দিন পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে জান্নাতী বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।
রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে তার মরদেহ তোলা হয়।
জান্নাতী বেগম গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ছালদার মিয়ার মেয়ে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম উদ্দিনের উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মরদেহটি কবর থেকে তোলা হয়। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ১০ বছর আগে বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে সোরহাব হোসেনের সঙ্গে জান্নাতী বেগমের বিয়ে হয়। জান্নাতী বেগমের ১২ বছরের এক মেয়ে ও পাঁচ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। জীবিকার তাগিদে স্ত্রী জান্নাতিকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন স্বামী সোরহাব হোসেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে ঢাকার একটি ভাড়া বাসায় ডিশ লাইনের তার লাগাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে জান্নাতি বেগমের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে স্বামী সোরহাব মরদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে তড়িঘড়ি করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয়।
ঘটনার সাত দিন পর মৃত্যু জান্নাতী বেগমের মামা ছকু মিয়া বাদী হয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর স্বামী সোরহাব হোসেনসহ পাঁচ জনকে আসামি করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
স্বজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই জান্নাতি শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল সোহরাব। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু হয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো হয়।
মামলার বাদী ছকু মিয়ার অভিযোগ, জান্নাতির মরদেহ নিয়ে আসার পর গোসল করার সময় গলা, বাম পাঁজর ও বাম হাতে রক্তাক্ত জখম দেখা যায়। এসময় উপস্থিত কিছু লোকজনের কাছে সাদা কাগজ স্বাক্ষর নিয়ে জান্নাতীর মরদেহ দাফন করা হয়। মূলত শারীরিক নির্যাতনের কারণেই জান্নাতির মৃত্যু হয়েছে।
তবে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জান্নাতীর স্বামী সোরহাব হোসেনসহ তার পরিবারের সদস্যরা। তারা বলছেন, কোনো নির্যাতন ও মারপিট করা হয়নি জান্নাতিকে। ডিশ লাইনের তার লাগাইতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে জান্নাতীর মৃত্যু হয়। পরে গ্রামে এসে তাকে দাফন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
এসএম