ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘ক্রসফায়ারের নামে’ ছাত্রদল নেতাকে হত্যা: শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাইসহ আসামি অর্ধশত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২৪
‘ক্রসফায়ারের নামে’ ছাত্রদল নেতাকে হত্যা: শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাইসহ আসামি অর্ধশত

বরিশাল: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সাড়ে নয় বছর আগে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কবির হোসেন রনিকে ‘ক্রসফায়ারে’র মাধ্যমে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।  

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই, সাবেক ডিআইজি, এসপিসহ পুলিশের পাঁচ কর্মকর্তা এবং অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেছেন নিহত ছাত্রদল নেতার ছেলে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম পান্না।  

সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোখলেচুর রহমান মামলাটি এজাহার রুজু করার জন্য আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন বলে বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন।  

মামলার বাদী হলেন ক্রসফায়ারে নিহত ছাত্রদল নেতা কবির হোসেন রনির ছেলে আশিকুর রহমান আসিফ (২০)।  

আসামিরা হলেন বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, আগৈলঝাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান ও আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লিটন সেরনিয়াবাত, বরিশাল রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি মো. হুমায়ন কবির, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আকরাম হোসেন, বরিশাল জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. এহসান উল্যাহ, সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার জাহাঙ্গির মল্লিক, আগৈলঝাড়া থানার সাবেক ওসি মনিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছাত্তার মোল্লা, সৈয়দ আশরাফ মিয়া, মামুন কবিরাজ, অনিমেষ মণ্ডল ও স্বপন মণ্ডল।

মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বরাতে আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম পান্না জানান, মামলার আসামি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, মোর্তুজা খান, রইচ সেরনিয়াবাত ও আবুল সালেহ লিটন মোল্লাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা গত ১৫ বছর ধরে সমগ্র জেলাকে একটি নৈরাজ্য জনপদ এবং ভয়াল উপত্যকায় পরিণত করেন। রাজনৈতিকভাবে বাদীর বাবা কবির হোসেন রনি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। আসামি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে বাদীর বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্ররোচনায় পুলিশ কর্মকর্তারা ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল নেতা রনিকে ঢাকার নবীনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটায় আগৈলঝাড়া উপজেলার বাইপাস ব্রিজের পশ্চিম পাশে রাস্তায় ছাত্রদল নেতা রনিকে গুলি করে হত্যা করেন। পরে সব আসামিরা বিষয়টি একযোগে ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টার নামে প্রচারণা চালায়। আসামিদের ভয়ে মামলা করতে সাহস পায়নি তার পরিবার।  

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আদালতে মামলা করেন বাদী। মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন প্রধান আসামি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ১৯৭৪ সালে বিএম কলেজের ছাত্র নজরুল, সদরুল ও সমরেশকে রাতের আধারে গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে খুন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২৪
এমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।