বরিশাল: তিন ঘণ্টা শেষে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে আগুন নেভানোর অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস।
রোববার (১৩ অক্টোবর) বেলা ১২টা ৫ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশালের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সকাল ৯টা ৩ মিনিটে আমরা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আগুন লাগার খবর পাই। স্বল্প সময়ের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে এবং আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। সেই সঙ্গে ভবনের ভেতরে আটকে পড়াদের উদ্ধার অভিযানও চালানো হয়। আমরা ৬০-৭০ জন রোগী হাসপাতালের এ ভবনের বিভিন্ন তলা থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিতে সক্ষম হয়েছি।
তবে এ অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিটের সহায়তায় আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এলেও ধোঁয়ার কারণে অভিযান সমাপ্তিতে বিলম্ব ঘটেছে।
হাসপাতালের মেডিসিন ভবনের নিচতলার স্টোর রুমে সকাল ৯টার দিকে ধোঁয়া দেখতে পান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
যদিও এর মধ্যে নিচতলার আগুনের ধোঁয়া গোটা পাঁচতলা ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে রোগী ও তার স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। তখন ফায়ার সার্ভিস, আনসার, পুলিশ, হাসপাতাল স্টাফ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় রোগীদের মেডিসিন ভবনের বিভিন্ন তলা থেকে নামিয়ে পুরাতন ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর মধ্যে ১২ অক্টোবর মেডিসিন ইউনিট-১ এ ভর্তি হওয়া মমতাজ (৭০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর খবর নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে হাসপাতালের স্টাফরা জানিয়েছেন, যেখানে আগুন লেগেছে সেটি পুরুষ মেডিসিন ইউনিট-৫ এর ভেতরে। ফলে সেখানে এই রোগী ভর্তি ছিলেন না, আর বুকে ব্যথা নিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ভর্তি হওয়া এই রোগীর আগুন লাগার পূর্বেই মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর স্বজনরা তার মরদেহ নিচে নামিয়ে আনলে তার মৃত্যুর বিষয়টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে যায়। বেলা সোয়া ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের খবর তাদের কাছে নেই।
হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহমুদ বলেন, রোগীদের উদ্ধার করে পুরাতন ভবনের নাক-কান গলা ইউনিটসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডকবলিত ভবনটিতে মেডিসিন বিভাগের পাঁচটি ওয়ার্ডের ১০টি ইউনিট ও ডেঙ্গু ওয়ার্ডের রোগীরা ছিলেন। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ৭০ জন ডেঙ্গু রোগীসহ ৫৪৩ জন রোগী ছিলেন ভবনটিতে। এছাড়া রোগীদের স্বজন, নার্স, চিকিৎসক, স্টাফরাও সেখানে ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৪
এমএস/এইচএ/