মৌলভীবাজার: গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্য নৌকাবাইচ। এটি এক প্রকারের নৌকা চালনার প্রতিযোগিতা।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আনন্দ আয়োজন, উৎসব ও খেলাধুলা সবকিছুতেই নদী ও নৌকার সরব আনাগোনা। হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংস্করণ বাংলাদেশের নৌকাবাইচ।
কালের বিবর্তনে আজ অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। তেমনি অনেক এলাকার ইতিহাস, ঐতিহ্য থেকে মুছে যাচ্ছে নৌকাবাইচের প্রচলন। নৌকাবাইচ লোকায়ত বাংলার লোকসংস্কৃতির একটি অংশ।
এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় নৌকাগুলো হয় সরু ও লম্বাটে। লম্বায় যেমন অনেক দীর্ঘ, ঠিক তেমনি চওড়ায় খুবই সরু।
সম্প্রতি মৌলভীবাজারের শেরপুরে কুশিয়ারা নদীতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে নদীর দুই পাড়ে সমাগম ঘটে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের।
বিকেলে দর্শকদের করতালি আর বাদ্যযন্ত্রের ধ্বনি ও বৈঠার তালে তালে অনন্য ঢেউ খেলে কুশিয়ারা নদী তীরের মানুষের মধ্যে। ঢোল ও তবলার তাল আর বৈঠার স্পন্দনের মুহুর্মুহু তরঙ্গ দর্শকের মনে আনন্দের ঢেউ তোলে।
রোববার (২১ অক্টোবর) শেরপুরে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে বিভিন্ন দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন মানুষ। মৌলভীবাজার জেলার শেরপুরের হামরকোনা গ্রামবাসীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৪টি নৌকা অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী নৌকার মধ্যে ৪টি নৌকাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন সাবেক সংসদ সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান।
প্রথম পুরস্কার (মোটরসাইকেল) অর্জন করে মৌলভীবাজারের রাজনগরের শাহ মোস্তফার তরী। দ্বিতীয় পুরস্কার (ফ্রিজ) অর্জন করে মৌলভীবাজারের রাজনগরের শাহ পরানের তরী, তৃতীয় পুরস্কার (এলইডি টিভি) অর্জন করে শেরপুর হামরকোনা গ্রামের কুশিয়ার তরী ও ৪র্থ পুরস্কার (মোবাইল হ্যান্ডসেট) অর্জন করে সিলেটের উসমানী নগরের কানাই শাহ তরী।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২৪
বিবিবি/আরবি