ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অন্তর্বর্তী সরকারের  সংস্কার পদক্ষেপকে  স্বাগত জানিয়েছে ইইউ 

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকারের  সংস্কার পদক্ষেপকে  স্বাগত জানিয়েছে ইইউ 

ঢাকা: আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক, বহুত্ববাদী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের দিকে সংস্কার অগ্রসর এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।  

সুশাসন ও মানবাধিকার বিষয়ক ইইউ-বাংলাদেশের যৌথ কমিশনের সভায় এ বিষয়ে স্বাগত জানানো হয়।

সোমবার (৪ নভেম্বর) ইইউ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

ঢাকায় ইইউ-বাংলাদেশ সহযোগিতা চুক্তির কাঠামোর অধীনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ইইউ এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার, সুশাসন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার অঙ্গীকার জোরদার করেছে। ইইউ এবং বাংলাদেশ স্বীকার করেছে যে দেশটি বাংলাদেশে মানবাধিকার ও সুশাসনের অগ্রগতির একটি অভূতপূর্ব সুযোগ তৈরি করেছে। তারা জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র ও সাধারণ জনগণের সাহস এবং সংকল্পের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ সম্প্রতি গঠিত সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কার করার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছে। ইইউ কমিশনের চলমান কাজকে স্বাগত জানিয়েছে। একই সঙ্গে নারী ও সংখ্যালঘুসহ তার সমস্ত বৈচিত্র্যের মধ্যে জনসংখ্যার বাস্তবতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় নেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরামর্শ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরবর্তী প্রক্রিয়ার বিষয়ে স্পষ্টতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে জুলাই-আগস্টে সহিংস দমন-পীড়নের শিকার এবং বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি পূর্ববর্তী মানবাধিকার লঙ্ঘন, ক্রান্তিকালীন বিচারের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধীদের জবাবদিহি করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছে ইইউ এবং বাংলাদেশ। ইইউ সব পর্যায়ে যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনি কাঠামোর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বৈঠকে। যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংশোধন করা উচিত বলেও মত দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে বিচার খাত, জনপ্রশাসন, নিরাপত্তা সেক্টর এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধির মতো সংস্কারের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নারী, শিশু এবং সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক গোষ্ঠীভুক্ত ব্যক্তিদের মানবাধিকার সংক্রান্ত উদ্বেগগুলো সমাধান করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে।

শ্রম অধিকারের বিষয়ে বৈঠকে বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘস্থায়ী সম্পৃক্ততা অনুসরণ করে। ইইউ এবং বাংলাদেশ শ্রম পরিদর্শনকে আরও কার্যকর করার মাধ্যমে এ বিষয়ে অগ্রগতির জন্য সম্মত হয়েছে।  

ইইউ বলেছে, ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশি রপ্তানির অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও শ্রম মানদণ্ডের ওপর নির্ভর করে। সম্প্রতি গৃহীত আইনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ইইউ, যা মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকারের সুরক্ষাকে শক্তিশালী করবে, সেই সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্যসহ ইউরোপীয় সরবরাহ শৃঙ্খল জুড়ে পরিবেশগত স্থায়িত্ব উন্নত করবে। বৈঠকে পুঙ্খানুপুঙ্খ নির্বাচনী সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়ে, তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা পুনর্গঠন এবং আন্তর্জাতিক মান সমুন্নত রাখা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ইইউ নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মিশনের সুপারিশগুলো স্বীকার করা হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।  

আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের দক্ষিণ এশিয়ার বিভাগীয় প্রধান রেনেসে তিরিঙ্ক।

বাংলাদেশ সময়: ০০০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪,  ২০২৪  
টি আর/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।