ঢাকা: এক অভিনব পদ্ধতিতে রাজধানীর ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভার মার্কেটে ‘ক্রাউন ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলার্স’ স্বর্ণের দোকানের সাটার কেটে ভেতরে প্রবেশ করে মাত্র ৮ মিনিটের মধ্যে আড়াই কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার চুরি করে সংঘবদ্ধ চোরচক্র পালিয়ে যায়।
এ চুরির ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রোববার (১২ জানুয়ারি) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিবি দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) থেকে শনিবার (১১ জানুয়ারি) পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজার ও কুমিল্লা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি লালবাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি হওয়া ৫০ ভরি আট আনা স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) আনুমানিক দুপুর একটায় ধানমন্ডি মডেল থানাধীন বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের গ্রাউন্ড ফ্লোরের ‘ক্রাউন ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলার্স’ শো-রুমে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই শো-রুমের মালিক কাজী আকাশ বাদী হয়ে ধানমন্ডি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন অজ্ঞাতনামা চোরেরা শো-রুমের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে ১৫৯ ভরি বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ ২৮ হাজার ৮০০ টাকা।
যুগ্ম কমিশনার আরো বলেন, ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, এক অভিনব পদ্ধতিতে শো-রুমের সাটার কেটে ভেতরে প্রবেশ করে মাত্র ৮ মিনিটের মধ্যে স্বর্ণালংকার চুরি করে সংঘবদ্ধ চোরচক্র পালিয়ে যায়। ওই দলের একজন একটি চাদর দিয়ে দোকানের সামনে শেড তৈরি করে এবং অপর একজন দ্রুত সাটারের তালা কাটে। তৃতীয় এক ব্যক্তি শোরুমে প্রবেশ করে ডিসপ্লে থেকে স্বর্ণালংকার বের করে একটি হ্যাভারসেক ব্যাগে ভর্তি করে দ্রুত বের হয়ে আসে। এছাড়া আরো কয়েকজনকে শোরুমের চারপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
তিনি আরো বলেন, ভিডিও ফুটেজে প্রাপ্ত ছবির সাথে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ গত ৯ জানুয়ারি অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজার হতে চট্টগ্রাম আসার পথে মো. রুবেল নামে একজনকে হেফাজতে নেয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পরবর্তীতে কুমিল্লার দেবীদ্বার বাজার সংলগ্ন নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সফিক ওরফে সোহেলকে হেফাজতে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানা এলাকার কোম্পানীগঞ্জ বাজারের একটি জুয়েলারি দোকান থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার এবং ২১ ভরি ১০ আনা চুরি যাওয়া স্বর্ণালঙ্কারের গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ সময় সেখান থেকে সাদ্দাম হোসেন নামে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য ৭০ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ৮-৯ জন এতে জড়িত বলে জানিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার এবং চুরি যাওয়া অবশিষ্ট স্বর্ণালংকার উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান, রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
এসসি/এসএএইচ