বরিশাল: বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ১৬০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে ছাঁটাই করার প্রতিবাদ ও ১ নভেম্বর সরকার নির্ধারিত বেতন দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশন শ্রমিক ইউনিয়ন হরিজনসহ ব্যানারে নগর ভবনের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন- বরিশাল সিটি করপোরেশন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হোসেন ঢালী ও সাধারণ সম্পাদক সেলিম জোমাদ্দার, পরিচ্ছন্নতাকর্মী সোহেল আকন, মিনু বেগম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কোনো ধরনের কারণ দর্শানো কিংবা কোনো ধরনের লিখিত নোটিশ না দিয়ে মৌখিক নির্দেশে গত ১ জানুয়ারি ১৬০ শ্রমিককে আকস্মিক ছাঁটাই করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায় ও বেআইনি। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অন্যদিকে ষাটোর্ধ্ব শ্রমিকদের সামাজিক কোনো নিরাপত্তা না দিয়ে হঠাৎ চাকরি থেকে বাদ দেওয়ায় তাদের পরিবার-পরিজন অবর্ণনীয় দুর্দশা ও অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে। তাই মানবিক কারণে তাদের কাজে যোগদানে অনুমতি দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মূল কথা ছিল বৈষম্য দূর করা। সামাজিক সুরক্ষা না দিয়ে এবং শ্রমিকদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণসহ যাবতীয় পাওনাদি পরিশোধ না করে বিনা নোটিশে কাজ বন্ধ করে দেওয়া প্রচলিত শ্রম আইনের পরিপন্থি। তাই আমরা এ অন্যায় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারি না।
বক্তারা আরও বলেন, চাকরিতে বহাল করা এবং দ্রব্যমূল্যসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ১ নভেম্বর থেকে বর্ধিত বেতন দেওয়ার দাবিতে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। তবে নগর ভবন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোনো ভ্রূক্ষেপ করছে না। এ অবস্থায় কর্ম বিরতিতে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই আমাদের।
এদিকে এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মাতা প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব অর্নব মুবিন, এস এম ওয়াহিদুর রহমান, সুমাইয়া জাহান সিফতসহ অন্য নেতারা। বক্তব্য শেষে তাদের একটি প্রতিনিধি দল ও শ্রমিক নেতাদের নিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি তুলে ধরেন।
সেখান থেকে বের হয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেলিম জোমাদ্দার বলেন, আমার চারটি দাবি হলো- ১ নভেম্বর ২০২৪ থেকে বর্ধিত বেতন কার্যকর এবং অফিসের মৌখিক আদেশে বাদ পড়া ষাটোর্ধ্ব ১৬০ জন শ্রমিককে মানবিক বিবেচনায় কাজে যোগদানের অনুমতি দেওয়া। মৃত ব্যক্তির পরিবারকে অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থা এবং বিগত ১৫-২০ বছর যাবৎ যে-সব শ্রমিক সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন শাখায় কর্মরত আছে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী শূন্য কোটায় স্থায়ী করা।
তিনি আরও বলেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ চারটি দাবির মধ্যে তিনটি তাৎক্ষণিক মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং ১৬০ শ্রমিকের কাজে বহালের বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। আর এ আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কর্মবিরতিতে যাইনি।
তবে এ বিষয়ে নগরভবন কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫
এমএস/আরবি