ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বিটিএলের ব্যানারে বাশারের অনলাইন প্রতারণা, ফেঁসে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

সুব্রত চন্দ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
বিটিএলের ব্যানারে বাশারের অনলাইন প্রতারণা, ফেঁসে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা মির্জা আবুল বাশার

ঢাকা: অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট এ কে এম আলউল হক বাবুল তেলের ডিলারশিপ কেনেন মির্জা আবুল বাশার নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে। চটকদার কথায় ফেলে ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে ছয় লাখের বেশি টাকা হাতিয়ে নেন বাশার।

গত বছরের ১১ জুন এই টাকার বিনিময়ে তার কাছ থেকে তিন হাজার ৯৩৪ লিটার সয়াবিন তেল পাওয়ার কথা বাবুলের। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক লিটার তেলও বুঝে পাননি। টাকা ফেরত পেতে বাবুলের চাপাচাপির পরিপ্রেক্ষিতে বাশার ব্যাংকের একটি চেক দিলেও অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় সেটি এখনো নগদায়ন করা যায়নি। বাবুল বুঝতে পারেন তিনি প্রতারকের ফাঁদে পড়েছেন।

রাজধানীর নিকুঞ্জের ১ নম্বর রোডের ৫৩ নম্বর বাড়ি ভাড়া নিয়ে ‘বিটিএল গ্রুপ’ নামে ব্যানার সাঁটিয়ে এমনই প্রতারণার অফিস খুলে বসেছিলেন আবুল বাশার। যেখানে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বাবুলের মতো আরও অনেকে। অনলাইনে পণ্য কেনার বিজ্ঞাপন দিয়ে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ফ্রিজ, এসি, সোফা, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের মতো মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে বিল পরিশোধ করেননি বাশার। বরং, ইচ্ছাকৃতভাবে টাকা নেই এমন অ্যাকাউন্টের চেক দিয়ে সবার সঙ্গে করেছেন প্রতারণা।

প্রতারণার শিকার বাবুলসহ অনেক ভুক্তভোগীর করা মামলায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর প্রতারক বাশারকে গ্রেপ্তার করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ। সেসব মামলায় কারাগারেও যান তিনি। তবে কয়েকদিন পরেই আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে এসে আবার শুরু করেন প্রতারণা। তবে এবার প্রতারণার অফিস খুলে বসেন রাজধানীর আরেক অভিজাত এলাকা বনানীতে।

আবুল বাশারের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে পুঁজি খুঁইয়ে পথে বসেছেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ ব্যবসায়ীরা। মানুষের বিশ্বাস অর্জন ও নিজের অপরাধ আড়াল করতে এই প্রতারক একজন চিত্রনায়িকাকেও তার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত করেছেন (নানাভাবে যোগাযোগ করেও বক্তব্য না পাওয়া যাওয়ায় তার নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি)।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সাল থেকে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন মির্জা বাশার। অনলাইনে পণ্য কেনার বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্রিজ, এসি, সোফা, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের মতো মূল্যবান সামগ্রী কিনে আনেন তিনি। এরপর বিক্রেতাকে দাম পরিশোধ না করে ব্যাংকের চেক দেন। কিন্তু সেই চেক ব্যাংকে জমা দিলে টাকা মেলে না। মাসের পর মাস ঘুরিয়ে চেকের মেয়াদ পার করে জিনিসপত্র নিজের করে নেন বাশার। তারপর এসব সামগ্রী দিয়ে আলিশান অফিস সাজান। এই অফিস দেখিয়ে আরেক পক্ষের কাছে তেল, আটা, ময়দা, চাল, ডাল, লবণসহ নানা ধরনের পণ্যের ডিলারশিপ বিক্রি করেন। ডিলারশিপের জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা অগ্রিম নিয়ে নেন। তবে কখনো পণ্য দেন না। এছাড়া ফেসবুকে নানা ধরনের বিজ্ঞাপন দিয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যানও কেনেন। এর বাইরেও পূর্বাচলের প্লট দেখিয়ে ইট, বালি, সিমেন্ট, রড নগদ টাকা ছাড়া ব্লাংক চেকের মাধ্যমে কিনে নেন বাশার। কিন্তু এই প্রতারক টাকা দেন না কাউকেই।

প্রতারণার এই ফাঁদ পাততে আবুল বাশার গড়ে তুলেছেন এক সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র। তার এই প্রতারণায় জড়িত রয়েছে বাড্ডা এলাকার একটি অপরাধী চক্র। প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের করা মামলায় বাশার একাধিকবার গ্রেপ্তার হলেও আইনের ফাঁক গলে বারবার জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। এরপর নতুন জায়গায় অফিস নিয়ে ফের শুরু করেছেন প্রতারণা। প্রতারণা যেন তার নেশা, বলছেন ভুক্তভোগীরা।

বাশারের প্রতারণার শিকার এ কে এম আলউল হক বাবুল বাংলানিউজকে বলেন, “জেল থেকে বের হওয়ার পর বাশারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে নিজেই স্বীকার করে সে প্রতারক। আমাকে বলে—বাবুল ভাই আমি একজন প্রতারক, আমার কাজই প্রতারণা করা। আমার কাছে এলে কেউ ফেরত যেতে পারে না। আপনিও ফেরত যেতে পারেননি। আমার কাছে টাকা দিতেই হবে। অনেক লোকজন আমার কাছে আছে। ”

বর্তমানে আবুল বাশার রাজধানীর বনানী সি ব্লকের ১৩/এ নম্বর রোডের ১০৩ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে অফিস খুলে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ১৫ ডিসেম্বর এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা দামের একটি চাইনিজ টেবিল বাশারের সেই অফিসে পৌঁছে দেন পলাশ চন্দ্র দাশ নামের এক ব্যবসায়ী। সেদিন টাকা বা কোনো কাগজ ছাড়াই জোর করে নিজের ক্যাডারদের ক্ষমতা দেখিয়ে টেবিল রেখে দেন বাশার। এ ঘটনায় বনানী থানায় মামলা করেন পলাশ। ওই মামলায় পলাশের সঙ্গী হয়েছেন আরও সাতজন ভুক্তভোগী। তারা হলেন- সৈয়দ আতিয়ার রহমান (৫৪), মোহাম্মদ সোহাগ হোসেন (২৭), মোছাম্মত মাহবুবা নাসরীন (৪৭), হাসান হা্ওলাদার (২৯), শফিকুল ইসলাম (৩৮), বাবুল চন্দ্র দাশ (৪০) ও আবু বকর সিদ্দিকী (২৭)।

এ মামলায় গত ৯ জানুয়ারি রাতে বনানী থানা পুলিশ আবার আবুল বাশারকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন ১০ জানুয়ারি পুলিশ তাকে আদালতে পাঠায়। তবে দুইদিন পরেই ১২ জানুয়ারি আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসেন বাশার। এর ফলে তার প্রতারণার পথ আরও প্রশস্ত হয়।

সহযোগীদের সঙ্গে মির্জা আবুল বাশারভুক্তভোগী আতিয়ার রহমান রাজধানীর বাংলামোটরের মিতুজা ইলেক্ট্রনিক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। গত ৩০ নভেম্বর অনলাইনে আবুল বাশারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। বাশারের কাছ থেকে পাঁচটি এসির অর্ডার পান তিনি। এসি কিনতে অগ্রিম ১০ হাজার টাকাও বিকাশের মাধ্যমে আতিয়ার রহমানকে পাঠিয়ে দেন বাশার। বাকি এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা বনানী অফিসে এসি পৌঁছে দেওয়ার পর ক্যাশে (নগদ) দেবেন বলে জানান। সে মোতাবেক পিকআপ ভাড়া করে পাঁচটি এসিসহ মিস্ত্রি ও দু’জন স্টাফ পাঠিয়ে দেন আতিয়ার রহমান।

আতিয়ার তার স্টাফদের টাকা হাতে না পেয়ে এসি হাতছাড়া না করতে বলে দিলেও তারা বাশারের লোকজনের মিষ্টি কথায় ভুলে এসি লাগিয়ে দেন। এসি লাগানো হলে বাশারের আপন ছোট ভাই মির্জা আব্বাস বিটিএল গ্রুপের একটি কথিত ক্যাশ চেক তাদের হাতে ধরিয়ে দেন। বাশারও তখন আতিয়ার রহমানকে ফোনকল করে সেই কথা জানান। পরদিন দুপুরে আতিয়ার রহমান ব্যাংকে গিয়ে চেক দিলে দেখেন ব্যাংকে টাকা নেই। তিনি বুঝে যান প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপর বাশারকে ফোনকল দিলে আরও কয়েকদিন আতিয়ারকে ঘোরান তিনি। কিন্তু টাকা আর দেন না। পরে গত ৮ ডিসেম্বর আতিয়ার বনানী থানায় গিয়ে দেখেন তার মতো আরও দুইজন একইভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে থানায় হাজির হয়েছেন। তারা সোফা বিক্রি করে বাশারের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

জুয়েল শেখ নামের এক ফার্নিচার ব্যবসায়ী এক লাখ এক হাজার টাকা দামে এক সেট সোফা বিক্রি করেছেন। ৩০ নভেম্বর মালামাল ডেলিভারি দিয়ে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছিল তাকে। এখনো ৬৬ হাজার টাকা উদ্ধারের জন্য থানার বারান্দায় ঘুরছেন তিনি।

শ্যাওড়াপাড়ার ফার্নিচার ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলামও ওই একই দিন সোফা পৌঁছে দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তিনিও ৬৫ হাজার টাকা পাবেন প্রতারক বাশারের কাছে। বাশার তাদের প্রত্যেককে একইভাবে অনলাইনে অর্ডার দিয়ে সোফা নিয়েছেন। মূল্য পরিশোধের জন্য দুইজনকেই দিয়েছেন চেক। প্রত্যেকের চেকের তারিখের যে কোনো একটি ঘরে দুটি ডিজিট বা সংখ্যা বসিয়ে দিয়েছেন। যাতে চেক বাউন্সের মামলা করলেও তিনি বেরিয়ে যেতে পারেন।

জুয়েল শেখ বাংলানিউজকে বলেন, আবুল বাশার চেক দিয়েছেন কিন্তু সেই চেকের বিপরীতে অ্যাকাউন্টে টাকা নেই। বনানী থানায় মামলা করেছি। আবুল বাশারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতেও পাঠিয়েছে। কিন্তু বাশার আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবার বেরিয়ে এসেছে।

ভিরাগো ফার্নিচারের মালিক আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখনো আবুল বাশারের কাছে ৬৫ হাজার টাকা পাবো। প্রতিদিনই টাকা দেয় দেয় করে মাসখানেক পার করে দিয়েছে। কিন্তু টাকা দেয়নি।

আবুল বাশার বর্তমানে যেখানে প্রতারণার অফিস খুলে বসেছেন, সেই ভবনের মালিকও তাকে ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে ফেঁসে গেছেন। প্রতারক বাশার চুক্তি মোতাবেক অ্যাডভান্সের পুরো টাকা যেমন পরিশোধ করেননি, তেমনি দেননি গত দুই মাসের ভাড়া। বরং প্রতারণার মাধ্যমে কেনা ফার্নিচার দিয়ে সাজানো আলিশান অফিসে গড়ে তুলেছেন মাদকের আড্ডাখানা। ফলে প্রতিদিন পাওনাদার ও প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীদের হইচই লেগেই থাকে ভবনে। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ির মালিক ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিলে উল্টো আইনি প্যাঁচ দেখাচ্ছেন বাশার।

বাড়িটির মালিক আহমেদ তারেক খানের পক্ষ থেকে তার এক আত্মীয় ও ব্যবসায়িক পার্টনার বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো ভুক্তভোগী আসে ওই ভবনে। কারও কাছ থেকে সোফা নিয়েছেন, কারও কাছ থেকে এসি নিয়েছেন, কারও কাছ থেকে টেবিল নিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী আসে পূর্বাচল-রূপগঞ্জ থেকে। সেখানে অনেকের কাছ থেকে ইট, সিমেন্ট, রড নিয়েছেন, কিন্তু টাকা দেননি। এখন পর্যন্ত ১৭-১৮ জনের বেশি এমন ভুক্তভোগী আসছে। প্রায়ই পাওনা টাকার জন্য ওই অফিসে ঝামেলা হয়। আমরা ওই ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে যেন ফেঁসে গেছি। বাসা ছাড়ার জন্য তাকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে নোটিশ দেওয়া হয়েছে, থানায় বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি বাসা তো ছাড়ছেনই না, উল্টো আইনের মারপ্যাঁচ দেখান, দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। থানার ওসির সামনে পর্যন্ত হুমকি দিয়েছেন। তিনি ওই ব্যবসাও ছাড়বেন না, বাড়িও ছাড়বেন না।

ওই অফিসে অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয় অভিযোগ করে তিনি বলেন, নেশাসক্তদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে ওই বাসা। রাত ৩টার সময়ও তাদের লোকজন আসে ওই বাসায়। উচ্ছৃঙ্খল মেয়েরা আসে মাঝরাতে। অনেক রাতে বের হয়।

তিনি আরও বলেন, বাসার অ্যাডভান্সের ২০ হাজার টাকা দেননি বাশার। গত দুই মাসের ৩০ হাজার টাকা করে ভাড়াও দেননি। উল্টো তার জিনিসপত্র হারিয়ে গেছে অভিযোগ করে আমাদের কাছে টাকা দাবি করেন।

বর্তমানে বাশারের বিরুদ্ধে বনানী থানায় প্রতারণার একটি মামলা ও দুইটি অভিযোগ রয়েছে। মামলাটির তদন্ত কাজ চলমান বলে জানিয়েছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সারোয়ার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাশার আসলেই টাউট। তার নামে ভাটারা থানায়ও অভিযোগ রয়েছে। আমার থানায় যে মামলা রয়েছে সেটির তদন্তকাজ চলছে। বাকি অভিযোগ দুটির বিষয়েও তদন্ত চলছে, সেগুলোও মামলায় রূপ নেবে। ’

তিনি আরও জানান, বাশারের বনানীর অফিস থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আনা অনেক মালামাল জব্দ করা হয়েছে। সেগুলোর জব্দ তালিকা করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগীরা আদালতে আবেদন করে মালামাল নিয়ে যেতে পারবেন। তবে বাশার এখন প্রতারণার মাধ্যমে বনানীতে মালামাল নিচ্ছেন না। অনলাইনে ইট, বালু, সিমেন্ট কিনে পূর্বাচলে নিচ্ছেন।

এদিকে খিলক্ষেত থানায় বাশারের নামে একটি প্রতারণাসহ দুইটি মামলার চার্জশিজ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওসি মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বাশারের বিরুদ্ধে নিকুঞ্জে অফিস ভাড়া নিয়ে বাড়ির মালিকের সঙ্গে ঝামেলার এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতারণার মামলা আছে। দুটোতেই চার্জশিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কে এই প্রতারক বাশার?
জাতীয় পরিচয়পত্রে শুধু আবুল বাশার লেখা থাকলেও তার পুরো নাম মির্জা আবুল বাশার ওরফে মামুন। তার বাবার নাম ফখরুল ইসলাম এবং মায়ের নাম হেমেলা বেগম। গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইসলামাবাদের পশ্চিম আউলিয়াপুর। বর্তমানে গুলশান ২ এর ১১৪ নম্বর রোডের ৩৫ নম্বর বাড়িতে থাকেন।

বাশার নিজের বাবাকে একজন স্কুলশিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিলেও প্রতারণার শিকার এ কে এম আলউল হক জানিয়েছেন, বাশারের বাবা স্কুলের নৈশপ্রহরী। মির্জা আব্বাস নামে তার এক ছোট ভাইও প্রতারণার সঙ্গী।  আরেক ভাই ভারতের জেলখানায় বন্দী।

অভিযোগ-মামলার বিষয়ে যা বলছেন বাশার
প্রতারণার অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মির্জা আবুল বাশার সব অস্বীকার করেন। তাকে ব্যক্তি আক্রোশ থেকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত না, সব অভিযোগ মিথ্যা। বনানী থানার ওসি আমার কাছে টাকা দাবি করেছেন, টাকা না দেওয়ার কারণে তিনি আমাকে ফাঁসাচ্ছেন। আপনি কাগজপত্রের সত্যতা যাচাই করলে কিছুই পাবেন না আমার নামে। আমি উল্টো অনেকের কাছে টাকা পাই। আমার অফিস থেকে মালামাল খুলে নিয়ে গেছে। পরে আমার নামে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে ধরে নিয়ে গেছে। দুইদিন পর আদালত আমাকে জামিন দিয়ে দিয়েছে। তারা আমার বিরুদ্ধে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। বনানী থানার ওসির বিরুদ্ধে আমি হাইকোর্টে রিট করতে যাচ্ছি।

খিলক্ষেত থানার দুই মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা আবুল বাশার বলেন, ওই দুই মামলার ফাইনাল রিপোর্ট হয়ে গেছে। দুই মামলাই ডিসমিস।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫
এসসি/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।