যশোর: ভাষার মাসে শহীদ মিনার ভেঙে টয়লেট নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি সরেজমিনে অনুসন্ধান করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু মোত্তালেব আলম জানান, সরেজমিনে অভিযোগের সত্যতা মেলায় কুশোরীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
আব্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি বিদ্যালয় চত্বরে মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত শহীদ মিনার ভেঙে সেখানে একটি টয়লেট নির্মাণ করছেন।
এর আগে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান গত সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছিলেন।
মণিরামপুর উপজেলার কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একই চত্বরে অবস্থিত। ওই চত্বরে প্রায় ৩০ বছর আগে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। যেখানে প্রতি বছর মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিদ্যালয় দুটির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকার মানুষ। গত ১৫ জানুয়ারি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ওই শহীদ মিনারটি ভেঙে সেখানে টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগ নেন।
এদিকে, ভাষা দিবসের আর মাত্র কয়েকদিন বাকী রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যালয় দুটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও চরমভাবে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেছেন, মাঠে পানি থাকায় জায়গা সংকটে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে শহীদ মিনার ভেঙে ওয়াশব্লক (টয়লেট) করা হচ্ছে। অচিরেই নতুন করে একটি শহিদ মিনার করা হবে।
তবে, কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন সরকার বলেছেন, কারও সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদ মিনার ভেঙে ফেলেছেন।
মণিরামপুর ইউএনও নিশাত তামান্না বলেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্তের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫
এসআরএস