ঢাকা: জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবু হেনা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল (আ হ ম মোস্তফা কামাল) তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে পৃথক চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট লোটাস কামাল পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন ২৭ কোটি ৫২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৩১ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখে এবং তার নিজ ও ব্যবসায়িক ৩২টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ২৩৪ কোটি ৮৬ লাখ ৬৫ হাজার ৬৪৭ টাকা জমা ও ২১১ কোটি ৫৫ লাখ ৮৮ হাজার ১৪১ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৪৪৬ কোটি ৪২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও (৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট লোটাস কামালের স্ত্রী কাশমিরি কামালের নামে ৪৪ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার ১৪৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায়। এছাড়া তার নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলে উক্ত প্রতিষ্ঠান এবং নিজ নামে মোট ২০টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৩৭৮০ টাকা জমা ও ৭ কোটি ৮৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫৩ টাকা উত্তোলনসহ মোট ২৬ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ১৩৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এত টাকা তার স্বামী আ হ ম মোস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল সংসদ সদস্য/মন্ত্রী থাকাকালীন ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জন করে তার উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে তার হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অপরাধ করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে মিসেস কাশমিরি কামাল এবং তার স্বামী আবু হেনা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১), দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে লোটাস কামাল কাশফি কামালের নামে ৩১ কোটি ৭৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৯৫ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায়। এছাড়া তিনি নিজ ও ব্যবসায়িক ৩৮টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৯০ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার ৬৯৪ টাকা জমা ও ৮৬ কোটি ৮৭ লাখ ৫২ হাজার ৮৫৪ টাকা উত্তোলনসহ মোট ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ২৩ হাজার ৫৪৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। উক্ত টাকা তার বাবা জনাব আ হ ম মোস্তফা কামাল সংসদ সদস্য/মন্ত্রী থাকাকালীন ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জন করে তার উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে উহার হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অপরাধ করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় কাশফি কামাল ও তার বাবা লোটাস কামালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১), দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় একটি মামলা করা হয়।
এছাড়া অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নাফিসা কামালের নামে ৬২ কোটি ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৬ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায়। এছাড়া তার নামীয় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ১৭ টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১০২ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৯২২ টাকা জমা ও ৯৭ কোটি ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৫ টাকা উত্তোলনসহ মোট ১৯৯ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এসব টাকা তার বাবা লোটাস কামাল সংসদ সদস্য/মন্ত্রী থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জন করে তার উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অপরাধ করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় নাফিসা কামাল ও তার বাবা আ হ ম মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১), দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
এসএমএকে/এমজে