ঢাকা, সোমবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

এটিএম আজহারের মুক্তি ১৮ কোটি মানুষের দাবি: রফিকুল ইসলাম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
এটিএম আজহারের মুক্তি ১৮ কোটি মানুষের দাবি: রফিকুল ইসলাম

সাতক্ষীরা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি না দিলে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তার মুক্তির দাবি এখন শুধু জামায়াতের দাবি নয়, বাংলাদেশের মুক্তিকামী ১৮ কোটি মানুষের দাবি।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নকিপুর সরকারি এইচ সি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

রফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি না মানলে বা এই দাবির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালে আমরা ইতোমধ্যে কর্মসূচি দিয়েছি, আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তাকে জেলে আটক রাখার এজেন্ডা ফ্যাসিবাদের এজেন্ডা, ভারতের এজেন্ডা।

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আওয়ামী লীগ একটি অভিশপ্ত দল। তারা ক্ষমতায় থাকতে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। লুটপাট করেছে। সাড়ে ১৫ বছর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছে। তারা অবৈধভাবে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল।

তিনি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এতো উন্নয়নের রোল মডেল হলে দেশ ছেড়ে পালালেন কেন?  

রফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে জামায়াত। যাকে তাকে জামায়াত-শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে একটি দল বিগত পতিত সরকারের মতো বক্তব্য দিতে শুরু করেছে।

তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জামায়াতের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালানো বন্ধ করেন। জুলুম, চাঁদাবাজি বন্ধ করেন। সাড়ে ১৫ বছর ঘরে বন্দি ছিলেন ঘর থেকে বের হতে পারেন নাই। বর্তমান পরিস্থিতিকে আল্লাহতায়ালার নেয়ামত হিসেবে মনে করুন। আল্লাহ আপনাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন করে দেবেন, দেশবাসীও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে ইসলামপন্থিদের জাগরণ শুরু হয়েছে। আমাদের ঐক্য হবে আরও সুদৃঢ়। মনে রাখবেন ষড়যন্ত্রকারীদের পরিণতি কোনোদিনই ভালো হয় না।  

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, গত ৫৩ বছরে যেখানে একটি সমৃদ্ধ ও সুখী রাষ্ট্র হওয়ার কথা ছিল, সেখানে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে স্বৈরশাসন, লাঠির শাসন এবং সর্বশেষ ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করা হয়েছে। এর থেকে মুক্তির একমাত্র পথ পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ধর্ম, বর্ণ, দল নির্বিশেষে এ দেশের সবাই ভালো থাকবে, সুখে থাকবে।

তিনি বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা সম্মানিত হবে। অমুসলিমরা সবচেয়ে ভালো থাকবে। ইসলামী সরকার তাদের জানমালের নিরাপত্তা দেবে। জামায়াতের কাছে অমুসলিমরা সবচেয়ে নিরাপদ থাকবে।

তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করেই নির্বাচন দিতে হবে। যেন তেন সংস্কার মানবো না, তবে সেই সংস্কারের নামে সময় ক্ষেপণ মানবো না। এ দেশের মানুষ জেগে উঠতে শিখেছে। জেগে ওঠা জনগণ কারও প্রভুত্ব মানবে না।  

শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহা. ইজ্জত উল্যাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, জেলা আমির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল ও সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম।

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা জামায়াতের নাবেয়ে আমির শেখ নুরুল হুদা, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবুল আলম, প্রভাষক ওমর ফারুক, জেলা অফিস সেক্রেটারি রুহুল আমিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।

এর আগে সকাল ৯টায় একই স্থানে জামায়াতের মহিলা কর্মী সম্মেলনেও প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।