ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

টিসিবির কার্ড নিয়ে যশোরে তুলকালাম, পৌর ভবন ঘেরাও

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২৫
টিসিবির কার্ড নিয়ে যশোরে তুলকালাম, পৌর ভবন ঘেরাও টিসিবির কার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা সোমবার যশোরের মণিরামপুর পৌরসভা কার্যালয় ঘেরাও করে

যশোর: টিসিবির কার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে যশোরের মণিরামপুরে বিক্ষুব্ধ জনতা পৌরসভা কার্যালয় ঘেরাও ও যশোর-চুকনগর সড়ক অবরোধ করে।  
আজ সোমবার (০৩ মার্চ) দুপুরে বিক্ষুব্ধ জনতা পৌর প্রশাসক ও মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্নাকে ওই অনিয়মের জন্য দায়ী করে তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান।

পরবর্তীতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দাবি, কিছু কার্ড যাচাই-বাছাইয়ের জন্য রেখে দেয়া হয়েছে। এগুলো দ্রুততার সাথে যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

এর বাইরে মণিরামপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রি না হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এটি নিয়েও স্থানীয়দের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
 
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, মণিরামপুর পৌর এলাকায় দুই হাজার সাতশ’ ৭২টি কার্ডের বিপরীতে টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য তিনজন ডিলারকে পণ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে প্রতিটি স্পটে কার্ডধারীদের মধ্যে পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিটি কার্ডের বিপরীতে পাঁচশ’ ৪০ টাকায় পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি চিনি, দুই লিটার তেল ও দুই কেজি ডাল বিক্রির কথা।  

এদিকে, সোমবার ভোর থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি ঘটে। কার্ড হোল্ডারদের বাইরেও অনেকে পণ্য দাবি করতে থাকেন। এ কারণে কেন্দ্রগুলোতে টিসিবি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হন ডিলাররা। এ নিয়ে উপস্থিত মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।  

মণিরামপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান জানান,  ইতিপূর্বে কার্ড বরাদ্দ করা হয় তিন হাজার তিনশ’টি। তাদের অভিযোগ এবার বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার আটশ’ ২২টি কার্ড। যারা কার্ড পাননি তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে কয়েক হাজার মানুষ মণিরামপুর পৌরসভার কার্যালয় ঘেরাও করেন। পরে তারা যশোর-চুকনগর মহাসড়ক অবরোধ করেন। এসময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে দুই পাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।  

বিক্ষোভকারীদের দাবি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক নিশাত তামান্নার গাফিলতির কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এসময় বিক্ষোভকারীরা ইউএনওকে পতিত ফ্যাসিস্টের দোসর আখ্যায়িত করতে থাকেন এবং তার অপসরণ দাবি করেন। বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান এবং পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আব্বাস উদ্দিন।

এক পর্যায়ে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম, মণিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেনসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তারা সকলের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।  

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না জানান, টিসিবির কার্ড পাওয়া গেছে দুই হাজার ছয়শ’ ৭৬টি। এর মধ্যে দুই হাজার দুশ’ ৯৬ জন ষ্মার্টকার্ডধারীর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার আটশ ২২টি। অবশিষ্ট চারশ’ ৭৪টি কার্ড বিতরণ না করায় ভূক্তভোগীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তবে চারশ’ ৭৪টি কার্ড সম্পর্কে নিশাত তামান্না জানান, অচিরেই যাচাই বাছাই শেষে সেগুলো সমাধান করা হবে।  

এদিকে, টিসিবির কার্ড নিয়ে ‘ঝামেলা’র কারণে মণিরামপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে সোমবার পণ্য বিক্রি বন্ধ রাখা হয় বলে স্থানীয়রা জানান। এগুলো হলো হরিহরনগর, ভোজগাতি, ঢাকুয়িা, রোহিতা, দূর্বাডাঙ্গা এবং শ্যামকুড় ইউনিয়ন।

এরমধ্যে শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে টিসিবির কার্ড বিতরণ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এতে জিয়াউর রহমানসহ তিনজন আহত হয়েছেন। পরে যৌথবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করে বলে থানার ওসি নুর মোহাম্মদ গাজী নিশ্চিত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২৫
এসএইচ
   
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।