ঢাকা, রবিবার, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

হিযবুত তাহরীর দমনে কঠোর অবস্থানে পুলিশ 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৫
হিযবুত তাহরীর দমনে কঠোর অবস্থানে পুলিশ 

ঢাকা: হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সংগঠন। ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর সংগঠনটিকে  নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

গোষ্ঠীটি বাংলাদেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং দেশে গণতন্ত্র সমর্থন করে না।  

নিষেধাজ্ঞার সময়, গ্রুপটি তার ঠিকানা এইচএম সিদ্দিক ম্যানশন, ৫৫/এ পুরানা পল্টন, ৪র্থ তলা, ঢাকা হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছিল। বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের কয়েকটি আরব দেশ, জার্মানি, তুরস্ক, পাকিস্তানে হিযবুত তাহ্‌রীর নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যেও তাদেরকে নিষিদ্ধ করে।

গত বছর জুলাই আগস্টে গণ অভ্যুত্থানের সময় ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে যাওয়ার পরপরই এই হিযবুত তাহরীর সদস্যরা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে তারা কর্মসূচি চালিয়ে যেতে দেখা যায়।
 
তেমনি গত শুক্রবার (৭ মার্চ) বাইতুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে প্রকাশ্যে কর্মসূচিতে অবস্থান নেয়। হিযবুত তাহরীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘মার্চ ফর খিলাফত’–এর ডাক দেয়।

হিযবুত তাহরীরের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমসহ পুরো এলাকায় সকাল থেকে নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা ছিল।

নাইটেঙ্গেল মোড়, পুরানো পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল ও গুলিস্থানসহ আশপাশের প্রতি মোড়ে মোড়ে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নেয়। পাশাপাশি বাইতুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে জল কামান, এপিসি ও প্রিজন ভ্যান মোতায়েন করা হয়। এছাড়া পুরো এলাকায় টহল অব্যাহত রাখে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

এত নিরাপত্তার মধ্যেও পল্টন মোড়ে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল করে।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষ হওয়ার পরেই হিযবুত তাহ্‌রীরের ব্যানার নিয়ে একটি মিছিল বের হয়। পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মিছিলটি পল্টন মোড় পার হয়ে বিজয়নগর মোড়ের দিকে যায়। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা অলিগলিতে ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণ পরে তারা আবার সংগঠিত হয়ে পল্টন মোড়ের দিকে আসতে থাকে। পুলিশ এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে। তখন মিছিলটি আবার ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

এদিকে বৃহস্পতিবার  (৬ মার্চ) রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়,হিযবুত তাহরীর একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন। আইন অনুযায়ী এদের সকল কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর কিছু আগে একই বার্তা পাঠান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

শনিবার (৭ মার্চ) পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের অন্তত ৩৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অন্যতম সংগঠক সাইফুল ইসলামও রয়েছেন। আমরা সমাবেশের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি।

হিযবুত তাহরীরের অনেক সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
সংগঠনটির সদস্যদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

এদিকে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক সমাজের উচ্চ পর্যায়ে লোকজন বলছেন, এত কঠোরতা মধ্যেও কিভাবে  শুক্রবার হিযবুত তাহরীর কর্মসূচি পালন করলো, তাহলে কি আমরা ধরে নিব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোর পুলিশ খেলছে। সাতই মার্চ বায়তুল মোকাররম থেকে 'মার্চ ফর খিলাফত' কর্মসূচির ঘোষণা দেয় হিযবুত তাহ্‌রীর। এর আগে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় এ সংক্রান্ত পোস্টার সেঁটে দেয় তারা। এগুলো কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগে চোখে দেখেনি। যদি দেখেও থাকে তাহলে কেন আগে থেকেই আইনগত ব্যবস্থা নিল না। হিযবুত তাহরীর কর্মসূচি ঘোষণা করছে যেখানে, সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তায় ঢেকে রাখা হলো। এতে কি বোঝা গেল, চারিদিক দিয়ে খোলা কর্মসূচির স্থানে নিরাপত্তা চাদরে ঘেরা। এইটা একটা নাটক হয়ে গেল। মানে চোর পুলিশ খেলা।

এদিকে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র থেকে জানা যায়,হিযবুত তাহরীর দমনে পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে। সরকারের তরফ থেকে কঠোর নির্দেশনা আছে, যেভাবেই হোক তাদের দমন করতে হবে কোনভাবেই যেন তারা পার পেয়ে না যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৫
এজেডএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।