ঢাকা, বুধবার, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ১২ মার্চ ২০২৫, ১১ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

টাঙ্গাইলের মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার আসামি আটকে মেহেরপুরে অভিযান, ছেলে গ্রেপ্তার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৫
টাঙ্গাইলের মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার আসামি আটকে মেহেরপুরে অভিযান, ছেলে গ্রেপ্তার

মেহেরপুর: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের প্রধান আসামি ফিরোজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রামনগর গ্রামে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। পরিবার নিয়ে আসামি ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ এই অভিযান পরিচালনা করে।

পরে ওই গ্রামের একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে তার ছেলে সাব্বির হোসেনকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাব্বির হোসেন মাদ্রাসার ওই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার সন্দিগ্ধ আসামি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা টাঙ্গাইলের মির্যাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাহাত আলী মুঠোফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাহাত আলী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা খবর পান মামলার প্রধান আসামি ফিরোজ মিয়া মেহেরপুর সীমান্তের অবৈধ পথ দিয়ে পরিবার নিয়ে ভারতে পালিয়ে যাচ্ছেন। এর ভিত্তিতে গাংনী থানা পুলিশের সহযোগিতায় রামনগর গ্রামে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের কথা টের পেয়ে আসামিরা ওই গ্রামের মাঠের একটি ভুট্টা ক্ষেতের জমির মধ্যে লুকিয়ে পড়েন।

পরে গ্রামবাসী ভুট্টা ক্ষেতের মধ্য থেকে ফিরোজ মিয়ার স্ত্রী ও ছেলে সাব্বির হোসেনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। তবে, শিশু ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সিএনজি চালক ফিরজ মিয়া (৪২) পালিয়ে যায়।

ফিরোজ মিয়ার স্ত্রী মামলার আসামি না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। ছেলে সাব্বির হোসেন এই মামলার সন্দিগ্ধ আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় নানি বাড়ি বেড়াতে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়। সম্প্রতি ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযুক্ত ফিরোজ মিয়া মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামের নওসের মিয়ার ছেলে।

ধর্ষণের ঘটনাটির পর ভুক্তভোগী ওই শিশু ও তার পরিবার ভয়ে মুখ না খুললেও ঘটনাটি রাতারাতি জানাজানি হয়ে যায়। ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতাব্বররা গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে। সালিশে ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ধর্ষণের শিকার শিশুর পরিবারকে ৯২ হাজার টাকা দিলেও জরিমানার বাকি ৫৮ হাজার টাকা না দিয়ে তালবাহানা শুরু করে ধর্ষক।

পরে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গত শনিবার দুপুরে থানা-পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু এবং তার মাকে থানায় নিয়ে যেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এই ঘটনায় শিশু ও নারী নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়। মামলায় ফিরোজ মিয়াকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত দু’জনকে আসামি করা হয়।

জানা যায়, ঘটনার দিন ওই সিএনজি চালক শিশুটির নানির বাড়ির পাশের জমিতে সার দিচ্ছিলেন। ওই জমির সাথেই শিশুটি গাছ থেকে কুল কুড়াচ্ছিল। ফিরোজ মিয়া শিশুটিকে কৌশলে ডেকে একটি টয়লেটের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করেন। এসময় তিনি ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখেন। ধর্ষণের কথা কাউকে বললে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখায় শিশুটিকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ১২ মার্চ ২০২৫
এসএইচ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।