ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চাঁদরাতের কেনাবেচায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৫
চাঁদরাতের কেনাবেচায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতারা

ঢাকা: ঈদের আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি থাকলেও শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে নগরবাসী। রাজধানীর প্রতিটি শপিংমল এবং ফুটপাতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে।

সরকারি ছুটিতে সড়কগুলো ফাঁকা থাকলেও শপিংমল ও ফুটপাতের সামনের চিত্র ভিন্ন দেখা গেছে।

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে শেষ মূহুর্তে পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যের দাম তুলনামূলক কম থাকায় ক্রেতারা যেমন খুশি, ক্রেতাদের সমাগমে বিক্রেতারাও তেমন খুশি।

রোববার (৩০ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়াসহ একাধিক এলাকার মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, এদিন সকাল থেকেই নারী-পুরুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। ১০টায় খুললেও এর আগ থেকেই মার্কেটগুলোর সামনে হাজির হন অনেক ক্রেতা। সন্ধ্যার পর ভিড় সামলাতে দোকানিদের হিমশিম খেতে হয়েছে। দোকানিরা বলছেন, গত ১০ বছরে এমন বেচাকেনা হয়নি। যে ক্রেতাই আসছেন কমবেশি কেনাকাটা করছেন।

এ ব্যাপারে মিরপুর শেওড়া পাড়া বাসস্ট্যান্ডে আদিবা ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী তারেক বাংলানিউজকে বলেন, করোনার পর কয়েকবছর চাঁদরাতে বেচাকেনা অনেক কম হতো। কিন্তু এবছর এর ব্যতিক্রম। আলহামদুলিল্লাহ প্রচুর ক্রেতা আসছেন এবং বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আজ বেশ কয়েকদিন ধরেই বিক্রি ভালো বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সাধ্যের মধ্যে সাধ পূরণ করতে পেরে খুশি সালমা বেগম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কয়েক বছরের মধ্যে এবছরই সবচেয়ে স্বস্তির ঈদ কাটাব। পুরো রমজানে নিত্যপণ্যের দাম কম থাকায় পরিবারের সবার জন্য চাহিদা মতো কেনাকাটা করতে পেরেছি। তবে পোশাকের দাম তুলনামূলক একটু বেশি হলেও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মিরপুর ১ নম্বর থেকে ঈদ কেনাকাটা করতে ১০ নম্বরের হোপ মার্কেটে এসেছেন নার্গিস বেগম। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমরা ঢাকাবাসী প্রতিবছরই চাঁদরাতে কেনাকাটা করি, এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর মার্কেটগুলোতে ভিড় একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে দোকানিরা ছাড় দেওয়ায় চাহিদার তুলনায় বেশি কেনাকাটা করেছি।

এদিকে ছাড় দিয়ে পণ্য বেশি বিক্রি হওয়ায় বিক্রেতারাও খুশি। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিবারই ঈদে আমাদের কিছু না কিছু ছাড় থাকে। এবারও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। এই ছাড় আমাদের বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানালেন সানজিদা ফ্যাশনের মালিক সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, অন্যান্য পণ্যের মতো আমাদের থ্রি-পিস, চাদর ও গজ কাপড়ের বিক্রি ভালো। আমাদের এখানে ১ হাজার টাকা দামে ভালো মানের থ্রি-পিস পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতারা কিনে খুশি হচ্ছেন।

মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স থেকে শপিং করতে পরিবার নিয়ে এসেছেন আফরোজা বেগম। তিনি বলেন, প্রতি ঈদের কেনাকাটা এখান থেকেই করা হয়। এখানে আসলে সকল প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে নিয়ে যেতে পারি।  

এদিকে শাহ আলী প্লাজা থেকে থ্রি-পিস কিনে খুশি মিরপুরের বিউটি আক্তার। তিনি বলেন, প্রতিবছরই এই মার্কেট থেকে ঈদের কেনাকাটা করি। এবারও থ্রি-পিস, শাড়ি, বাচ্চাদের কাপড় কিনলাম। আরও কিছু কসমেটিকস কিনব। চাঁদরাত বলে মার্কেটে ভিড়টা অনেক বেশিও মনে হচ্ছে।

শেষ মুহূর্তে শপিংমল ছাড়াও ফুটপাতের দোকানগুলোতেও জনস্রোত দেখা গেছে। ফুটপাতের ভিড় সড়কের যান চলাচলে স্থবিরতা তৈরি করছে। ফুটপাতের ভিড় সামলাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও দারুণ বেগ পোহাতে হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে ভিড় উপেক্ষা করেও ক্রেতারা তাদের পণ্য সংগ্রহ করছেন। ঈদ আনন্দ আয়োজনে ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত রয়েছে মিরপুরের ১ নম্বর থেকে মিরপুরের ১৩ নম্বরের ফুটপাতের দোকানপাট। ক্রেতাদের এই ভিড় রাত পেরিয়ে সকাল অবধি থাকবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে ফুটপাতে এবছর চাঁদাবাজি না থাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি দেখা গেছে। চাঁদাবাজি না থাকায় ব্যবসায়ীরাও স্বাচ্ছন্দে ব্যবসা করতে পারছেন। দীর্ঘদিন পরে হলেও পণ্য কেনাবেচায় ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তির বাতাস বইছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৫
এসএমএকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।