ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ চৈত্র ১৪৩১, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিবাদ মিছিলের ভিড়ে ভাঙচুর-লুটপাট করল কারা?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৫
প্রতিবাদ মিছিলের ভিড়ে ভাঙচুর-লুটপাট করল কারা?

ঢাকা: গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল থেকে দেশের ছয় জেলায় ইসরায়েলি পণ্য রাখা ও বিক্রি করার অভিযোগ তুলে অন্তত ১৬টি রেস্তোরাঁ ও শো-রুমে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার পরপরই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন এবং যারা এই ভাঙচুরের সাথে জড়িত দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৭ মার্চ) দুপুরের দিকে কক্সবাজারে পাঁচটি, চট্টগ্রামে তিনটি, সিলেটে পাঁচটি, গাজীপুরে চারটি, কুমিল্লায় একটি এবং বগুড়ায় একটি প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে এসব হামলার ঘটনায় কোনো হতাহতের সংবাদ নেই।

এদিন রাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকায় মিছিল থেকে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেনি। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পুলিশ প্রস্তুত আছে। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে পুলিশ নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষুব্ধ মানুষেরা ফাস্ট ফুড চেইন কেএফসি, পিৎজা হাট, বাটার মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের শো-রুমে হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি কোমল পানীয় কোকাকোলা, সেভেন আপ রাখায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানও হামলার শিকার হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

গাজায় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের জেলায় জেলায় শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল, স্লোগান-সমাবেশ ও ধর্মঘট পালন করেন।

সকাল থেকে সারা দেশের জেলা-উপজেলা শহর ছিল প্রতিবাদমুখর। সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যার যার অবস্থান থেকে পথে নেমে এসে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন, মিছিলে স্লোগান তুলেছেন।

এ বিষয়ে বিবৃতিতে বাটা বলেছে, “আমরা আমাদের দোকানে আক্রমণের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাই। দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের অনেকগুলো দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে ও মালামাল চুরি করা হয়েছে। একটি স্বনামধন্য বহুজাতিক কোম্পানির বিরুদ্ধে এই ধরনের আচরণ নিন্দনীয় ও দুর্ভাগ্যজনক। বর্তমানে আমরা এসব ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করছি। ”

এদিকে পুলিশ প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, খুলনা, সিলেট, কক্সবাজার, কুমিল্লাসহ বেশ কিছু স্থানে ভাঙচুর ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে নির্দেশনা অনুযায়ী যারা হামলা চালিয়েছে তাদের শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লুটপাট ও ভাঙচুরের সময় পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রশাসন থেকে জানানো হয়, পুলিশ নিয়মিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। তবে যারা এই ভাঙচুর ও লুটপাট এর সাথে জড়িত তারা অবশ্যই সুযোগসন্ধানী, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

দেশের বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ মিছিল থেকে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

সোমবার (৭ এপ্রিল) এমন নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাছে হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ আছে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশ বর্তমানে এ নিয়ে কাজ করছে।

অন্যদিকে সোমবার দিবাগত গত রাত ১২টা পর্যন্ত সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটে জড়িত তিন যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

আরও পড়ুন:
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ আইজিপির

বাংলাদেশ সময়: ০১১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৫
এজেডএস/এসসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।