ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ২০ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সমন্বয়ক পরিচয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
সমন্বয়ক পরিচয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ

কুষ্টিয়া: সমন্বয়ক পরিচয়ে কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বোর্ড সভাপতি আব্দুর রহিমের কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ সময় তাকে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ভেতর লাঞ্ছিত করা হয়। আব্দুর রহিমের স্বাক্ষরিত পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বর্তমানে আমি বোর্ডের সভাপতি পদে আছি। আমার বিশেষ প্রয়োজনে আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক। ’

এদিকে আব্দুর রহিম ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ হওয়ায় তাকে পদ থেকে সরে যেতে বলায় স্বেচ্ছায় তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার সদস্য সুমন আহমেদ।

তবে সুমনকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে জানিয়ে তার দায়ভার সংগঠন বহন করবে না বলছেন জেলার নেতারা। এদিকে পুরো ঘটনা সমিতির জেনারেল ম্যানেজারের সামনে ঘটলেও তিনি তা অস্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, ২০২০ সালে কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৫ নম্বর এলাকার পরিচালক নির্বাচিত হন আব্দুর রহিম। পরে তিনি সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও সচিব পদে দায়িত্ব পালন করেন। চলতি বছরের ১ মার্চ আব্দুর রহিম সমিতির বোর্ড সভাপতির পদে শপথ নেন। ২০২৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই কিছু লোকজন জোরপূর্বক তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।

আব্দুর রহিম বলেন, মঙ্গলবার কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বোর্ড সভা ছিল। আমি সেখানে গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে সুমন নামে এক যুবক দল বেঁধে এসে আমাকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে আমাকে লাঞ্ছিত করেন। এরপর জোরপূর্বক জেনারেল ম্যানেজারের কক্ষের ভেতরে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে তারাই জমা দেন। কী লিখেছে, কী করেছে, আমি কিছুই দেখিনি।

আব্দুর রহিম বলেন, এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর উপায় নেই। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা কোনো ঝামেলায় যেতে দিতে চাননি। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এর বিচার আল্লাহর হাতেই ছেড়ে দিলাম।

মোবাইল ফোনে সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া যুবক সুমন আহমেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আব্দুর রহিম আওয়ামী লীগের দোসর। এই শহরে ফ্যাসিবাদের কোনো দোসরকে পুনর্বাসন করতে দেওয়া হবে না। আমরা তাকে জোর করিনি। তাকে সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করে চলে যেতে বলেছিলাম। তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়ার সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সুমন জেলা কমিটির সদস্য ছিল। তার বিতর্কিত কার্যক্রমের জন্য তাকে আগেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন সে আমাদের কেউ না। তার ব্যক্তিগত অপকর্মের দায়ভার সংগঠন বহন করবে না।

কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলী ইসমাত কামাল বলেন, আব্দুর রহিম নিজেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। জোর করে স্বাক্ষর করে নেওয়ার কোনো অভিযোগ পাইনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।