ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০২ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪৬, এপ্রিল ২৯, ২০২৫
‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

ঢাকা: মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধকবলিত রাখাইন রাজ্যে সহায়তা পৌঁছে দিতে ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপন নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন খবরে বাংলাদেশ সরকারের ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা প্রচার হলে এই আলোচনা তৈরি হয়।

এ নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত এমন বিষয়ে দেশের ‘প্রধান অংশীদারদের’ সঙ্গে পরামর্শ ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হয়নি।

এই প্রেক্ষাপটে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি প্রশ্নোত্তরমূলক পোস্ট করেন তিনি।

এতে শফিকুল আলম প্রশ্ন হিসেবে উল্লেখ করেন, কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের একটি মানবিক করিডোরের খবর ছড়িয়েছে। উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে যে, এটি বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর ভূ-রাজনৈতিক নকশার অংশ এবং এটি বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বে প্রভাব ফেলবে। তাছাড়া বাংলাদেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক দল মন্তব্য করেছে যে, দেশের প্রধান অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল না। আসলে কী ঘটছে?

বিষয়টির ব্যাখ্যায় শফিকুল আলম জানান, কথিত এই করিডোর নিয়ে জাতিসংঘ বা কোনো সংস্থার সঙ্গে সরকারের আলোচনাই হয়নি।

তিনি বলেন, “আমরা একেবারে স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি। তবে আমাদের অবস্থান হলো, রাখাইন রাজ্যে যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে মানবিক সহায়তা প্রদান শুরু হয়, তাহলে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে আগ্রহী থাকবে। ”

প্রেস সচিব বলেন, ‘জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে চরম মানবিক সংকট চলছে। বাংলাদেশ অতীতেও মানবিক সহায়তায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে— সম্প্রতি মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ত্রাণ পাঠানোর বিষয়টি এর বড় উদাহরণ। ’

‘উপরন্তু আমরা উদ্বিগ্ন, রাখাইনে মানবিক দুর্দশা অব্যাহত থাকলে সেখান থেকে আরও মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে পারে, যার ভার আমরা আর বইতে পারবো না’

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা মনে করি, জাতিসংঘের সহায়তায় এই মানবিক কার্যক্রম রাখাইন অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবে। ’

প্রেস সচিব বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘বর্তমান বাস্তবতায়, রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর একমাত্র কার্যকর রুট হচ্ছে বাংলাদেশের মাধ্যমেই। সে অনুযায়ী, এই রুট দিয়ে ত্রাণ সরবরাহে লজিস্টিক সহায়তা দিতে  বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সম্মত। ’

‘যদিও এখন পর্যন্ত রাখাইনে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ রাখছে। এক্ষেত্রে সময়মতো বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গেও পরামর্শ করা হবে’, বলেন শফিকুল আলম।

এই উদ্যোগের পেছনে কোনো বড় শক্তির ভূ-রাজনৈতিক পরিকল্পনা আছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশকে টার্গেট করে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এটি তারই অংশ।

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।