নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া থেকে ২ নম্বর রেলগেট পর্যন্ত প্রধান সড়কের ওপর গড়ে উঠেছে ১৩টি অবৈধ সিএনজি, অটো ও লেগুনা স্ট্যান্ড। পাশাপাশি ফুটপাত তো বটেই, সড়কের একটি বড় অংশও দখল করে নিয়েছে হকাররা।
শহরের প্রাণকেন্দ্রে এতগুলো অবৈধ স্ট্যান্ড থাকার ফলে প্রবেশপথে তীব্র যানজট দেখা দেয়। পাশাপাশি মূল সড়ক হকারদের দখলে চলে যাওয়ায় নগরজুড়ে সারাদিনই যানজট লেগে থাকে, ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নগরবাসীকে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান চালানো হলেও, এর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। অভিযানের সময় হকাররা মালপত্র সরিয়ে নেয়, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার বসে পড়ে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শহরের চাষাঢ়া বাইতুল আমান মসজিদের দুই পাশে দুটি, রাইফেলস ক্লাবের সামনে, লাজ ফার্মার সামনে, খাজা সুপার মার্কেটের সামনে, সোনালী ব্যাংকের সামনে, শহীদ মিনারের কোনায়, চাষাঢ়া আল-জয়নাল ট্রেড সেন্টারের সামনে, মহিলা কলেজের সামনে, ২ নম্বর রেলগেট আলমাস পয়েন্টের পাশে দেওভোগমুখী সড়কের দুই পাশে, ফজর আলী ট্রেড সেন্টারের সামনে, ২ নম্বর রেলগেট মিডটাউন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে-মোট ১৩টি অবৈধ স্ট্যান্ড রয়েছে।
এই অবৈধ স্ট্যান্ডগুলোর কারণে শহরের প্রধান প্রবেশপথে সারাদিনই যানজট লেগে থাকে। শহরে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় যানবাহনগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, ফলে পুরো শহরজুড়ে যানজট তীব্র হয়ে ওঠে।
অন্যদিকে শহরের ফুটপাতের পাশাপাশি মূল সড়কের একটি বড় অংশও এখন অস্থায়ী হকারদের দখলে। চাষাঢ়া থেকে ২ নম্বর রেলগেট, কালীরবাজার, শহীদ মিনারের পেছন দিক, ফ্রেন্ডস মার্কেট এলাকা-প্রায় সব প্রধান সড়ক ও ফুটপাতে হকাররা পসরা সাজিয়ে বসে আছেন।
সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ আমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে ৫ আগস্টের পর থেকে ফুটপাতে হকারদের দৌরাত্ম্য আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। বরং কর্তৃপক্ষকে হকারদের শুধু অনুরোধ করতে দেখা গেছে, যেন তারা ফুটপাতে সীমাবদ্ধ থাকেন।
একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক আল-আমিন জানান, শুধুমাত্র সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, ফুটপাত থেকে নয়। এর ফলে কোনো সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী। হকারদের পুনর্বাসন ও সড়ক-ফুটপাত দখলমুক্ত না করা পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একাধিকবার অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ ও সড়ক দখলমুক্ত করতে অভিযান চালিয়েছি। এ বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রয়োজনে অভিযান জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি।
এমআরপি/এসআইএস